সরেজমিনে, শেরপুরের তেরাবাজার মসজিদ মার্কেট ছাড়াও খরমপুর, নয়আনী বাজার, কাকলি মার্কেট, নিউমার্কেট মোড়সহ ফুটপাথের বিভিন্ন দোকানে বিক্রি হচ্ছে আতর, টুপি, তসবিহ ও সুরমা।
ফুটপাথে মৌসুমি এসব অস্থায়ী দোকান পরিচালনাকারী অধিকাংশই মাদ্রাসা ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী। তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রমজানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এসব পণ্য বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন তারা।
ব্যবসায় লাভের টাকা একদিকে যেমন তাদের ব্যক্তিগত চাহিদা মেটাচ্ছে অন্যদিকে সংসারের কাজেও ব্যবহার হচ্ছে। বিপণি বিতানের ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ১০ রোজার পর থেকে টুপি, পাঞ্জাবি, জায়নামাজ, সুগন্ধি আতর, সুরমা, তসবি এসব পণ্যের বিক্রি অনেকটা বেড়েছে।
তারা বলেন, আতরের মধ্যে রয়্যাল, কদম, ফেরারি এগুলো বেশি চলে। সবগুলো মিলির (ছোট) দামই ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। দামি আতরের তুলনায় কম টাকার আতরের দিকেই বেশি নজর ক্রেতাদের।’
এ বছর শেরপুরের বাজারে জেসমিন, হাসনা হেনা, রজনীগন্ধা, বেলি, চকোলেট মাক্সসুলতান, জান্নাতুল ফেরদৌস, রয়েল, ফিগো, হাজরে আসওয়াদ নামের আতরসহ অন্যান্য নামকরা ব্র্যান্ডের আতরের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে।
এগুলোর দাম প্রতি এমএল ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত। আতর ছাড়াও দোকানে বিভিন্ন বাহারি ও মনকাড়া ডিজাইনের আতরদানিও পাওয়া যায় বিক্রেতারা জানান, এ বছর তুরস্ক, ভারত, সৌদি আরব, কাতার ও মালয়েশিয়ার তৈরি টুপি বেশি বিক্রি হচ্ছে। নকশা, কাপড় ভেদে ১০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা দামের টুপিও পাওয়া যায়।
এছাড়া দোকানগুলোতে বিচিত্রময় নকশার জায়নামাজও রয়েছে। সুতি, মখমল, সিলিকন, পশমিসহ বিভিন্ন রকমের এসব জায়নামাজ বাংলাদেশ ছাড়াও পাকিস্তান, কাশ্মির, বেলজিয়াম, চীন, সৌদি আরব ও কাতার থেকে আসে।
এসব জায়নামাজের দাম ১৫০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। এছাড়া রয়েছে কাঠ, প্লাস্টিক, মুক্তা, পাথর, হাতির দাঁত, হরিণের শিং, ক্রিস্টালসহ বিভিন্ন উপাদানে তৈরি তসবি। এর মধ্যে ২৫ গুটি, ৫০ গুটি থেকে শুরু করে ১০০, ২০০, ২৫০ ও সর্বোচ্চ ৫০০ গুটির তসবিহ পাওয়া যায়। তবে ডিজিটাল তসবিরও চাহিদা বেশি। এসব তসবির দাম ৫০ থেকে শুরু করে ৫০০ টাকা পর্যন্ত।
টুপি ও সুগন্ধি আতর কিনতে আসা শিক্ষার্থী আরমান আলিফ (২৬) জানান, মুসলিম উম্মাহর বড় ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে ঈদ। এই ঈদে নতুন পাঞ্জাবির পাশাপাশি নতুন টুপি, শরীরে সুগন্ধি আতর বাড়তি সৌন্দর্য যোগ করে। তাই ঈদের আগে পছন্দের টুপি ও আতর কিনতে এসেছি।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত কামাল উদ্দিন (৪৫) বলেন, ঈদের জামাতে জায়নামাজ ব্যবহার একটি পুরনো ঐতিহ্য বহন করে। ছোট বেলায় আমরা দেখেছি বাবা ও চাচারা জায়নামাজ হাতে করে ঈদগাহে যেতেন। তাই সেই পুরনো ঐতিহ্যের কথা মনে করে একটি জায়নামাজ কিনতে এসেছি।’
রোমানিয়া বোরকা হাউজের স্বত্বাধিকারী সাইফুল ইসলাম (৩৮) বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এবছর বিক্রি ভাল। আশা করছি ঈদ যত ঘনিয়ে আসবে বেচা-বিক্রি তত বাড়বে।’
তেরাবাজার ক্যাপ হাউজের স্বত্বাধিকারই স্বত্বাধিকারী উদ্দিন (৪৮) জানান, এ বছর দেশীয় পণ্যের পাশাপাশি দোকানে বিদেশী নানা পণ্যের সমাহার রয়েছে। এছাড়া ক্রেতাদের পছন্দ ও চাহিদার কথা চিন্তা করে বিদেশি নামিদামি কিছু ব্র্যান্ডের সুগন্ধী আতর ও জায়নামাজ ডিসপ্লে করা আছে।
