সমতলের চা বাগানে জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি, দুই মাস চলে প্রুনিং সিজন। এ সময় বন্ধ থাকে চা প্রক্রিয়াজাতকরণের সব কারখানা। মার্চ থেকে ডিসেম্বর আবারো পুরোদমে চলে চায়ের মৌসুম।
২০২৪ সালের চা বোর্ডের হিসাবমতে, ভালো নেই সমতলের চা শিল্প। এই এক বছরে চা চাষে জমির পরিমাণ কমেছে অন্তত ১ হাজার একর। আর উৎপাদন কমেছে অন্তত ৩৪ লাখ কেজি। বাগান মালিকরা বলছেন, কারখানা মালিকদের সিন্ডিকেট আর চা পাতার ন্যায্যমূল্য না পেয়ে অনেকে চা গাছ কেটে ফেলে অন্য ফসলের আবাদ শুরু করছেন। কেউ কেউ বাগান ধরে রাখলেও ঠিকমতো পরিচর্যা করেননি। নতুন মৌসুমে চায়ের ন্যায্যমূল্য না পেলে হুমকিতে পড়বে সমতলের চা শিল্প।
২০২৩ সালে সমতলে ১ কোটি ৭৯ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়। তবে গেল মৌসুমে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৪৫ লাখ কেজিতে। চায়ের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া, ওজন থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাদ দিয়ে দাম পরিশোধে ক্ষুদ্র চা চাষিদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে বলে জানান চা বোর্ডের কর্মকর্তা।
পঞ্চগড় চা বোর্ড আঞ্চলিক কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফ খান বলেন, ‘কৃষকদের থেকে যখন পাতা সংগ্রহ করা হয়েছে তখন শুনেছি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাদ দিয়ে দাম পরিশোধ করা হয়েছে। এই বাদ দেয়াটা রেকর্ডে আসে নাই। এটা থেকে যে ফিনিশ প্রোডাক্ট হয়েছে সেটাও রেকর্ডে আসে নাই।’
এদিকে, সমতলে উৎপাদিত চায়ের অর্ধেকও নিলামে যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে খোদ চা বোর্ড চেয়ারম্যান। আগামীতে চাষিদের থেকে সরাসরি চা পাতা কিনতে ক্রয় সেন্টার চালুর কথাও জানান তিনি।
বাংলাদেশ চা বোর্ড চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন বলেন, ‘চায়ের সঙ্গে যারা জড়িত তারা সাময়িক মুনাফার জন্য পুরো সেক্টরটাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সেই চায়ের আমাদের দরকার নেই। অবৈধ পরিবহণ হলে আমরা হার্ড লাইনে যাব। এতদিন আমরা শুধু জরিমানা করেছি কিন্তু এর পর থেকে ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দেব।’