বাজেট ২০২৪-২৫
অর্থনীতি

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি খেলাপী ঋণ-অর্থ পাচার ঠেকানোর আহ্বান

মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে নেয়া হয়েছে পরিমিত বাজেট। এরপরও তা বাস্তবায়নে রয়েছে খেলাপিঋণ, অর্থ পাচার, ব্যাংকিং খাতের দুরবস্থা এবং ডলার সংকটসহ নানা সমস্যা। তাই আগামী বাজেটে এসব বিষয়ে জোর দিতে হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

আজ (বৃহস্পতিবার, ২০ জুন) বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে (বিএআরসি) আগামী বাজেটে বাংলাদেশের অর্থনীতি, প্রবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিয়ে এক আলোচনায় এ কথা জানানো হয়। সেই সাথে কৃষি পণ্য উৎপাদনে খরচ কমানো, উৎপাদন থেকে বাজারজাত পর্যন্ত সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং আমদানি সহজীকরণ ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

দেশের মূল্যস্ফীতির ঘোড়া ছুটছে লাগামহীনভাবে। নানা চেষ্টা করেও আসছে না স্বল্প আয়ের মানুষের আয়ত্বে আয়ত্তে।

কোভিড পরবর্তী সময় ও দেশে দেশে যুদ্ধের কারণে গত বছর অক্টোবরে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়ায় ১২.৫৬ শতাংশ। এরপর নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে ভর্তুকি ও কর ছাড়, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, রিজার্ভ ও ডলার সংকট কমাতে রেমিট্যান্সে প্রণোদনা এবং নয় ছয় সুদের সিদ্ধান্ত থেকে বের হয়ে আসে সরকার। এরপর মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও তা চলতি বছরের মে মাসে আবার বেড়ে হয়েছে ১০.৭৬ শতাংশ।

এরই প্রেক্ষিতে ছুটে চলা মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশ নামিয়ে আনতে নেয়া হয় আগামী ২০২৪-২৫ বাজেট পরিকল্পনা। বিগত বাজেটগুলোর তুলনায় যা ৯ লাখ ৯২ হাজার কোটি টাকা হওয়ায় কথা। তা হয়েছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। আর তাই এ বাজেটকে বলা হয়েছে পরিমিত বাজেট।

তাই এ বাজেটে উন্নয়ন ব্যয় কমানো ও সুদের হার বাড়ানোসহ যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা মূল্যস্ফীতি আর বাড়তে দিবে না বলে জানান বক্তারা।

আলোচনায় বলা হয়, ব্যয় কমানোর বাজেট হওয়ায় উন্নয়ন ব্যয় ৩ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকার বিপরীতে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার প্রভাব মূল্যস্ফীতি কমাতে সাহায্য করবে।

কৃষি বিশেষজ্ঞ সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, 'খেলাপি ঋণ, অর্থপাচার বন্ধ, ব্যাংকখাতের সমস্যা সমাধানে একীভূতকরণ ও অফশোর ব্যাংকিংয়ে নজর দিতে হবে।'

সেই সাথে আগামী বাজেটে কৃষি পণ্যের উৎপাদন থেকে বাজার ব্যবস্থা পর্যন্ত সঠিক পদক্ষেপ এবং সবার জন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিনিধি ড. জিওকুন শী।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, 'সার ও তেল কেনার কারণে রিজার্ভ ৪০ থেকে কমে ২০ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। তাই কৃষি পণ্য উৎপাদনে খরচ কমাতে কাজ করা প্রয়োজন।'

অপরদিকে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, 'বিশ্বব্যাংক থেকে টাকা নিতে তাদের কথা শুনতে হবে।' বাজেট নিয়ে যেসব পরামর্শ দেয়া হয়েছে তা পুনর্বিবেচনা করা হবে বলেও জানান তিনি।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কৃষি ও খাদ্যে সরবরাহ বাড়ানো এবং আমদানি সহজীকরণের পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। এছাড়া দাম বাড়িয়ে এককভাবে ব্যবসায়ীরা যাতে সুবিধা নিতে না পারে, সে বিষয়ে কার্যক্রম বাড়ানোর পরামর্শ দেন তারা।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর