অর্থনীতি
0

'চালের উৎপাদন বেড়েছে চার গুণেরও বেশি'

গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে চালের উৎপাদন চার গুণেরও বেশি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ। এর ফলে দেশে এখন চালের ঘাটতি নেই, অভ্যন্তরীণ উৎপাদন দিয়েই চাহিদা মেটানো যাচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

আজ (মঙ্গলবার, ২১ মে) ইন্দোনেশিয়ার বালিতে চলমান ১০ম ওয়ার্ল্ড ওয়াটার ফোরামের 'গ্রহ ও মানুষের জন্য ধান' শীর্ষক মিনিস্টিরিয়াল সেশনে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট যৌথভাবে এ সেশনের আয়োজন করে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের কৃষক ও কৃষির কল্যাণে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। কৃষিতে ভর্তুকির পরিমাণ বৃদ্ধি, গবেষণা খাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি, গবেষণা অবকাঠামোর উন্নয়ন, গবেষণার সুযোগ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা করেছেন। এসব বহুমুখী উদ্যোগ বিশ্বে বাংলাদেশকে কৃষিপণ্য উৎপাদনের রোল মডেলে পরিণত করেছে।'

তিনি বলেন, 'বিশেষ করে চালে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে ও স্বয়ংসম্পূর্ণতা বজায় রাখতে দারুণভাবে সাহায্য করেছে। গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে চালের উৎপাদন চার গুণেরও বেশি বেড়েছে। এর ফলে দেশে এখন চালের ঘাটতি নেই, অভ্যন্তরীণ উৎপাদন দিয়েই চাহিদা মেটানো যাচ্ছে। এই অর্জন না হলে আমাদের লাখ লাখ মানুষ খাদ্য সংকটে পড়তো, খাদ্য শরণার্থী হয়ে যেত এবং বিশ্বব্যাপী সংকট তৈরি হতো। কিন্তু বাস্তবে এই অর্জনের ফলেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় প্রদান ও খাওয়ানোর সাহস দেখিয়েছেন।'

সকল দেশ ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান ড. মো. আব্দুস শহীদ।

এ সেশনে ইন্দোনেশিয়ায় নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর ক্যারোলিন টার্ক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। চীনের পানিসম্পদ মন্ত্রী লি গিউইং, ইন্দোনেশিয়ার কৃষিমন্ত্রী আন্দি এমরান সুলাইমান, সংযুক্ত আরব আমিরাতের জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ মন্ত্রী আমনা বিনতে আব্দুল্লাহ আল দাহাক প্রমুখ আলোচক হিসাবে বক্তব্য রাখেন। বিশ্বব্যাংকের গ্লোবাল ম্যানেজার মাইকেল জে.ওয়েবস্টার সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন।

এ সময় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের ইন্দোনেশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. তারিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর এবং যুগ্মসচিব মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।

অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিগণ এ সেশনে তাদের দেশের অর্জিত অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন এবং সকল মিলে খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন ও জলবায়ু পরিবর্তন রোধে এক সাথে কাজ করার অঙ্গীকরা ব্যক্ত করেন।

একইদিন দুপুরে মন্ত্রী 'ওয়াটার ফর দ্য শেয়ার্ড প্রসপারিটি' শীর্ষক সেশনে বলেন, 'মানুষ, উদ্ভিদ এবং প্রতিটি জীবের জন্য নিরাপদ পানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বে জনসংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে আবাদি জমি কমছে। টেকসই উন্নয়ন ও সকল মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পানি অপরিহার্য। সেজন্য আমাদের সকলকে পানি সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা এবং পানির প্রতিটি ফোঁটার সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে হবে। বিশ্বব্যাপী সকল অংশীজনের সম্মিলিত আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতার মাধ্যমেই এটি অর্জন করা সম্ভব।'

পানি সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, কৃষিতে সেচ দক্ষতা বৃদ্ধি ও ধান চাষে পানির সাশ্রয়ী ব্যবহারে বাংলাদেশ সরকারের নানামুখী উদ্যোগ এ সময় তুলে ধরেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, 'আমরা কৃষিকাজে পানির অপচয় রোধ ও কৃষকের সেচ খরচ আরও কমাতে কাজ করে যাচ্ছি। ভূগর্ভস্থ পাইপের মাধ্যমে সেচ প্রদান ও ধান চাষে পর্যায়ক্রমে ভেজানো ও শুকানো পদ্ধতির সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।'

এসএস