যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বসন্তকালীন আলোচনার চতুর্থ দিনে স্থানীয় সময় ১৯ এপ্রিল আঞ্চলিক অর্থনীতির চিত্র তুলে ধরে এসব পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।
বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি বা মুদ্রানীতি বা অর্থনীতির জটিল অংক বা হিসাব-নিকাশ সাধারণ মানুষ বোঝেন না। তারা বোঝেন তাদের ভাতের থালার দাম উঠলো কত, শিক্ষা-স্বাস্থ্যে কতটা কাটছাঁট করতে হলো আর বাসস্থানের যে হিসাব-নিকাশ, সে দেনা-পাওনা মেটানোর পর তার পকেটে কতটা সঞ্চয় হলো বা কতটা ফাঁকা হলো।
আইএমএফ বলছে, শুধু বৈশ্বিক কারণেই নয়, রাষ্ট্রগুলোর যে রাজস্ব নীতি রয়েছে, তার পরিকল্পনা সময়মতো বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণেও মুদ্রাস্ফীতি এবং মূল্যস্ফীতির চাপ নিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
গত এক বছরে মূল্যস্ফীতির রেকর্ড ভাঙার প্রতিযোগিতা ছিল খাদ্যপণ্যের বাজারে। সার্বিক মূল্যস্ফীতি কখনো ওঠানামা করলেও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারে অসহায় হচ্ছে মানুষ। আয়ের সাথে ব্যয়ের ব্যবধান হয়েছে চড়া। শুরুতে সরকারের আমদানি রপ্তানি সমন্বয়ে কঠোর নীতি আরোপ করে সরকার।
এরপর মুদ্রানীতিতে ঋণের সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসে কঠোরতা। চালু হয় ট্রেজারি বিলে ৬ মাসের গড়ে স্মার্ট রেট পদ্ধতি। তবে মূল্যস্ফীতি সামাল দিতে মুদ্রানীতি আরও কঠোর করার পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ।
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনীতির চিত্র তুলে ধরে ক্রিস্টিলিনা জর্জিয়েভা বলেন, ‘বেশিরভাগ দেশের রাজস্বনীতি বাস্তবায়ন খুবই পিছিয়ে এবং এটি আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। এতে বাৎসরিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ধীরগতি দেখা দিচ্ছে। এতে রাজস্ব ব্যয় বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে মূল্যস্ফীতিকে বাড়িয়ে তুলছে। যা সুদের হারে চাপ ফেলছে।’
তিনি বলেন, ‘পরবর্তী অর্থনৈতিক ঝুঁকি এড়াতে এ অঞ্চলের দেশগুলোকে তাই আরও বেশি কঠোর হতে হবে। যাতে বাৎসরিক রাজস্ব পরিকল্পনা সময়মতো বাস্তবায়ন করা যায়।’
সারাবিশ্বের প্রবৃদ্ধিতেক এশিয়ার অবদান ৬০ শতাংশ। তবে দুর্নীতির কারণে অনেক দেশে দেশি বিদেশি বিনিয়োগ কমছে বলে মনে করছে আইএমএফ।
আইএমএফ বলছে, দুর্নীতি ক্যান্সারের মতো অনেক দেশকে গ্রাস করেছে। যা বিনিয়োগ কমার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এমনকি বিদেশি বিনিয়োগও কমছে। অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির স্বার্থে যুদ্ধ বন্ধ হওয়া জরুরি।
সংবাদ সম্মেলনের শেষে আইএমএফের এশিয়া ও প্যাসিফিক ডিপার্টমেন্টের পরিচালক কৃষ্ণা শ্রীনিবাস বলেন, 'বাংলাদেশের রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ডলারের বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার বিকল্প নেই। বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি সামলাতে তাই মুদ্রানীতি কঠোর হওয়া দরকার।’
আইএমএফ বলছে, যেসব দেশে মূল্যস্ফীতি কমাতে পারছে তারা এগিয়ে যাচ্ছে তাড়াতাড়ি। ফিসক্যাল পলিসিতে আয়-ব্যয় ঋনে বড় ঘাটতি রয়েছে বেশিরভাগ দেশে।