ঈদকেন্দ্রিক অর্থনীতির অন্যতম অনুষঙ্গ কেনাকাটা। তবে ঈদকে কেন্দ্র করে যে বাণিজ্য বা লেনদেন হয় তা শুধু পোশাক কেনাকাটার ওপর ভিত্তি করে নয়, এর সাথে যুক্ত থাকে আরও অনেক হিসাব-নিকাশ, যা চাঙ্গা করে অর্থনীতিকে।
ঈদে লেনদেনের শীর্ষ খাতগুলোর মধ্যে পোশাক অন্যতম। যেখানে লেনদেন হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা, জুতা-কসমেটিকসে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার কোটি, ভোগ্যপণ্যে ৭ হাজার কোটি, যাতায়াত বা যোগাযোগে ১০ হাজার কোটি, যাকাত-ফিতরায় ৩৮ হাজার কোটি, সোনা-হীরায় ৫ হাজার কোটি, ভ্রমণে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি, ইলেকট্রনিক্সে ৪ হাজার কোটি টাকাসহ ঈদকেন্দ্রিক অর্থনীতির আকার প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে এবার।
মূল্যস্ফীতির চাপ, ডলার সংকট ও নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্যের উচ্চমূল্যের মধ্যেও ঈদকে ঘিরে দেশের অর্থনীতি অনেকটা চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। এবারের ঈদে ব্যবসায়ীদের টাকার অঙ্কে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলেও পরিমাণের দিক থেকে ঘাটতি থেকে গেছে।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, 'ইতিমধ্যে আমাদের ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকার মতো ঈদকেন্দ্রিক অর্থনীতি আকার ছাড়িয়ে গিয়েছে। প্রতি বছর ১০ শতাংশ অর্জন করতে পারলে আমরা ভাবি ব্যবসা ভালো করতে পেরেছি।'
উৎসবকেন্দ্রিক বড় এই লেনদেনে নতুন মাত্রা যুগিয়েছে বাজারে ছাড়া অতিরিক্ত নতুন টাকার নোট। সবকিছু মিলিয়ে স্বল্প সময়ে অর্থনীতিতে যে গতিশীলতা এসেছে তার সুফল পেয়েছে দেশ।
অর্থনীতিবিদ ও গবেষক ড মাহফুজ কবীর বলেন, 'দেশের অর্থনীতিতে উৎসবকে ঘিরে আমদানি বেড়েছে। কিন্তু আমরা সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির মাধ্যমে যাচ্ছি। আবার বাজারে যদি যায় দেখতে পাবো সব ধরনের পণ্য রয়েছে। ঈদকেন্দ্রীক ব্যবসা বাণিজ্য যত হবে তাহলে সারা বছরের যে ক্ষতি সেটা ব্যবসায়ীরা পুশিয়ে নিতে পারেন। মূল্যস্ফীতি এইসময়ে কম হওয়া উচিত কারণ যেহেতু বিক্রি বেশি হচ্ছে।
দেশে যে কোনও উৎসবেই কেনাকাটা বাড়ে। তবে সবচেয়ে বেশি কেনাকাটা হয় দুই ঈদেই। তাই ঈদকে কেন্দ্র করে সারাদেশে যে আর্থিক লেনদেন হয়, সেখানে শীর্ষে থাকে পোশাক কেনাকাটা। এছাড়া বাণিজ্যের অন্যান্য সূচক মিলিয়ে অতিরিক্ত যে লেনদেন হয় তা অর্থনীতিকে সাময়িক চাঙ্গা করলেও বর্তমান মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে তা সহায়ক নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।