চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে ক'দিন আগেই হয়ে গেল তারুণ্যের জয় বাংলা কনসার্ট। চোখ ধাধানো স্টেজ, সুবিশাল এলইডি আর রঙবেঙের আলোকসজ্জায় এলাহি কাণ্ড। লাইটের আলোর দোল আর আধুনিক সাউন্ড সিস্টেমে মনোমুগ্ধকর উপস্থাপনা। সবমিলিয়ে জমজমাট আয়োজন। কিন্ত যত সহজে এসব কথা বলা হয়ে গেল এমন সফল আয়োজন সম্পন্ন করা কিন্তু অতটা সহজ না। এর পেছনে লাগে এসব খাতের দক্ষ শত মানুষের শ্রম আর মেধা।
আর এখানেই প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের। বিয়ে, গায়ে হলুদ জন্মদিন থেকে শুরু করে করপোরেট মিটিং কিংবা বড় স্টেজ শো সবকিছুতেই ডাক পড়ে তাদের। মূলত ৯০ দশক থেকে দেশে ইভেন্ট ম্যানেজম্যান্টের যাত্রা শুরু। বর্তমানে গ্রামগঞ্জ থেকে শুরু করে রাজধানী পর্যন্ত আছে হাজার খানেক প্রতিষ্ঠান। লাইট, সাইন্ড, ডেকোরেশন, ডিজাইনার, ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর সবমিলিয়ে নানা রকম পেশায় যুক্ত হচ্ছে তরুণরা।
হোপ ট্রেডের চেয়ারম্যান আহমেদ নেওয়াজ বলেন, 'ইভেন্ট করতে গেলে প্রতিটি জিনিসকে দেখতে হয়। একটা পিন পর্যন্ত সুন্দরভাবে দেখতে হয় নাহলে এইটাকে ডেভেলপ করা যায় না। মানুষের চাহিদা চিন্তা করে সবকিছু করতে হয় আর এখন মানুষের চাহিদাও বেশি।'
মানুষের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে রুচির পরিবর্তন আর আধুনিকতার সম্মিলনে এ খাত পেয়েছে নতুন মাত্রা। ঢাকা, চট্টগ্রামের মতো দুটি বড় শহরে উল্লেখ করার মত শতাধিক প্রতিষ্ঠান বড় বড় ইভেন্ট কাভার করছে। আর এ খাতের বাজারও এখন প্রায় হাজার কোটি টাকার মতোই। যা সামনে আরও বাড়বে।
ডট বার্থ লিমিটেডের গ্রুপ অ্যাকাউন্ট ডিরেক্টর আব্দুল্লাহ বিন জুবায়ের বলেন, 'জন্মদিন বা বিয়ে হলে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট বা ডেকোরেটারকে ডাকা হতো। এখন কিন্তু দিন দিন এইগুলার চাহিদা অনেক বাড়ছে। এখন বড় বড় বিয়ে, কনসার্ট হচ্ছে। এইটার দিন কিন্তু চেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে।
শুধু অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনাই নয়। এখন করপোরেট প্রতিষ্ঠান কিংবা পণ্যের লিফলেট নিয়ে দলবেধে মানুষের দোরগোড়ায় যাচ্ছে তরুণরা। এতে পড়াশোনার পাশাপাশি কর্মসংস্থান হচ্ছে শিক্ষার্থীদেরও।
ডট বার্থ লিমিটেড হেড অব এক্সপেরিয়েনশিয়াল মার্কেটিং মাহফুজুর রহমান মাসুম বলনে, 'যেকোনো একটা অনুষ্ঠান করতে গেলে লাইট, সাইন্ড ও এলইডি লাগে। প্রত্যেকটা মাধ্যমে দেখা যায় ২০ থেকে ৩০ জন করে মানুষ কাজ করছে।'
তবে এখনও দেশে আন্তর্জাতিক মানের স্টেজ, সাউন্ড সিস্টেম বা অনুষ্ঠান আয়োজন বড় চ্যালেঞ্জ। হাজার কোটি টাকার খাত হলেও বিভাগীয় শহরে নেই ভেন্যু। সাথে দক্ষকর্মী আর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ঘাটতিতো আছেই। এছাড়া বিদেশি সংস্কৃতির প্রভাবে দেশীয় সংস্কৃতিও আধিপত্য হারাচ্ছে বলে দাবী কারও কারও।
বড় অনুষ্ঠান বা ইভেন্টে হাজার থেকে লাখো মানুষের সম্মিলন হয়। তৈরি হয় নানা রকম আবর্জনা, তাই পরিবেশ রক্ষায় ভবিষ্যতে গ্রিন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট নিয়ে ভাবছেন উদ্যোক্তারা।