এমন চৈত্রের দিনে পুরো দেশ, জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে প্রস্তুতি নেয় বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিতে। খাজনা আদায়ের জন্য সম্রট অকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন । একটা সময় পর্যন্ত উৎসব গ্রামকেন্দ্রিক থাকলেও ষাটের দশক থেকে নগরকেন্দ্রিক হতে শুরু করে।আর পুরো মাসজুড়ে চারুকলায় প্রস্তুতিযজ্ঞ চলে।
বর্তমানে হালখাতার আয়োজন সীমিত পরিসরে হলেও অর্থনৈতিক জায়গা দখল করেছে পোশাক শিল্প। মলিন চেহারার গার্মেন্টস কন্যার দাগ পড়া হাতের স্পর্শে তৈরি হয়েছে নিজস্ব পোশাক সংস্কৃতিসমৃদ্ধ একটি দেশ।
নব্বই দশকের পরপরই বাংলাদেশের ফ্যাশন শিল্পে নববর্ষ এক অর্থনৈতিক জায়গা দখল করে। বর্তমানে বাংলাদেশে ফ্যাশন শিল্পে মোট বিক্রির অর্ধেক বিক্রি হয় রোজার ঈদে। আর পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে ২৫ ভাগ বিক্রি হয়।
এবছর বেশিরভাগ বিপণিবিতানে নববর্ষের চেয়ে ঈদের পোশাক বেশি কিনতে দেখা গেছে। পবিত্র ঈদুল ফিতর ও বর্ষবরণ উৎসব একসময় হওয়ায় অনেকেই ঈদ আর বৈশাখ মাথায় রেখেই কেনাকাটা সারছেন, করছেন বাজেট কাটছাঁট।
ক্রেতারা বলেন, ঈদ আর নববর্ষ একসময়ে হচ্ছে। আমরাও চেষ্টা করছি, যেন ঈদের মধ্যেই পহেলা বৈশাখ কাভার হয়ে যায়। আর সবকিছুর দামও বেশি। তাই এ সুযোগে ঈদ ও নববর্ষ একসঙ্গে পালন হয়ে যাবে।
প্রতি বছর ফ্যশনহাউসগুলোর ঈদের পর পহেলা বৈশাখকে ঘিরে সবচেয়ে বড় প্রস্তুতি নিতে হয়। বিক্রিও হয় প্রচুর তবে এবার দুই উৎসব একসময় হওয়ায় ফ্যাশন হাউসগুলো পোশাকের নকশায় ও রঙে বৈশাখকেন্দ্রিক না থেকে বৈচিত্র্য আনার কৌশল নিয়েছেন।
বিশ্ব রঙের স্বত্বাধিকারী বিপ্লব সাহা বলেন, ‘আমরা পোশাকে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করেছি। পোশাকের ডিজাইন এমনটি করেছি, যাতে বাজেটের মধ্যে ক্রেতারা ঈদ ও নববর্ষ একসঙ্গে পালন করতে পারেন।’
নববর্ষকে ঘিরে ঠিক কী পরিমাণ অর্থের জোগান আসে, তার সঠিক হিসাব নেই। তবে বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠনের মতে আনুমানিক প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকার মতো সম্পূর্ণ দেশি পোশাক বিক্রি হয়। তাই বৈশাখ বাঙালির পোশাক সংস্কৃতিচর্চার ক্ষেত্রেও বিশেষ অবদান রেখে চলেছে।