কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা অংশে ব্রহ্মপুত্রের বালিতে প্রচুর পরিমাণে এসব খনিজ সম্পদ আছে বলে নিশ্চিত করেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইএমএমএম।
উজান থেকে নেমে আসা ব্রহ্মপুত্র নদ, গাইবান্ধার সাঘাটায় নাম ধারণ করেছে যমুনা। পানি প্রবাহ না থাকায় ভেসে ওঠা যমুনা-ব্রহ্মপুত্রে জেগে উঠেছে ধু-ধু বালুচর। এই বালিতেই লুকিয়ে আছে হাজার হাজার কোটি টাকার মূল্যবান সম্পদ।
খনিজ সম্পদের গবেষণা প্রতিষ্ঠান জয়পুরহাটের ইন্সটিটিউট অব মাইনিং, মিনারেলজি অ্যান্ড মেটালার্জি'র (আইএমএমএম) পরিচালক ও গবেষক ড. মোহাম্মদ নাজিম জামান বলেন, ‘কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা অংশে ব্রহ্মপুত্র নদের বালিতে ইলমেনাইট, রুটাইল, জিরকন, ম্যাগনেটাইট, গারনেট ও কোয়ার্টজের মতো মূল্যবান ছয়টি খনিজ পাওয়া গেছে। এখানকার বালিতে আরও খনিজ শনাক্তের কাজ চলছে।’
কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার বিভিন্ন বালুচর থেকে ১ হাজার ৫শ’ টন বালু সংগ্রহ করা হয়। খনিজ প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে বিভিন্ন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রতি টন বালি থেকে ২ কেজি ইলমেনাইট, ২শ’ গ্রাম রুটাইল, ৪শ’ গ্রাম জিরকন, ৩.৮ কেজি ম্যাগনেটাইট, ১২ কেজি গারনেট ও ৫০ কেজি কোয়ার্টজ মিনারেল পাওয়া যায়।
গবেষকরা বলছেন, ১০ মিটার গভীরতায় প্রতি এক বর্গকিলোমিটার এলাকা থেকে প্রাপ্ত খনিজের বাজার মূল্য ৩ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা। এবার বালি থেকে এসব খনিজ আহরণের বিষয়ে ভাবছে সরকার।
মোহাম্মদ নাজিম জামান, ‘আমি খনিজ সন্ধানের বিষয়টি সরকারের কাছে উপস্থাপন করেছি। আমার মনে হয়, সরকারি পর্যায়ে আরও গভীরভাবে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে।’
তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতা আমিনুল ইসলাম গোলাপ বলেন, ‘জাতীয় স্বার্থ অক্ষুন্ন রেখে আমাদের জাতীয় সম্পদ রক্ষায় সরকারকে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে হবে। এখানে যে খনিজ সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে, সেটির ব্যবহার নিশ্চিতে সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে আমরা আশা করছি।’
গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল বলেন, ‘যেকোন খনিজ সম্পদই একটি জেলার অর্থনীতির পরিবর্তনে বড় ভূমিকা রাখে। একমাত্র খনিজ সম্পদের কারণে সৌদি আরবের অর্থনীতি বদলে গেছে। আমরা এ বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে প্রস্তুত আছি।’
১০ মিটার গভীরতায় প্রতি এক বর্গকিলোমিটার এলাকা থেকে উত্তোলনের পর নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত বালুর বাজার মূল্য মাত্র ৮০ কোটি টাকা। আর সমপরিমাণ এলাকা থেকে প্রাপ্ত খনিজের বাজার মূল্য ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। তাই কোন প্রক্রিয়ায়, কোন প্রতিষ্ঠান এসব খনিজ আহরণ করবে- শিগগিরই তা নির্ধারণ করবে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।