'ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত' কবির এই আক্ষেপ কিংবা আশার বাণীকে পূর্ণতা দিতে পহেলা ফাল্গুনের আগের রাতে ব্যস্ত নগরবাসী ভিড় করেন ফুলের দোকানে। কারও সঙ্গে প্রিয়জন, কেউবা এসেছেন প্রিয়তমার জন্য।
শাহবাগে ফুল বাজারে দেখা মিললো এলভিস পরিবারের সাথে। বসন্ত বরণ তো আছেই সঙ্গে ভালোবাসা দিবস আর সরস্বতীর আরাধনা। সবমিলে উৎসবের এমন ক্ষণ ফুলেল সুবাস ছাড়া বড্ড বেমানান। তাই ঘুমকে ছুটি দিয়ে মাঝরাতে উদযাপনে মেতেছেন তারা।
এলভিস পরিবারের সদস্যরা বলেন, ' আমরা সবাই এখন যান্ত্রিক জীবনযাপন করছি। তাই এই একটা দিন একসাথে উপভোগ করা অনেক বেশি দরকার।'
ঘরে রেখে আসা প্রিয়জনের জন্য ফুল কিনতে এসেছেন কামরাঙ্গীচরের শাখাওয়াত হোসেন। মা আর স্ত্রী-সন্তানকে চমকে দিতে ফুল কিনেছেন তিনি। তাঁর কাছে উৎসব মানেই ফুল। তিনি বলেন 'আসলে এটি মনের একটা শান্তি। এখানে বলার মতো কিছু নেই।'
ফুল কিনতে কিনছেন এলভিস পরিবারের সদস্যরা
তিন উৎসবের রাতে নির্ঘুম শাহবাগের ফুল বাজার। দোকানে দোকানে শোভা ছাড়াচ্ছে নানান রঙের গোলাপ, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, লিলি, রজনীগন্ধা আর চন্দ্রমল্লিকারা। ফুলের রূপে নিজেকে রাঙাতে একটু চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে নগরবাসীকে।
সাধারণ দিনের চেয়ে ২০ থেকে ৪০ টাকা বাড়তি দেশি গোলাপে। চায়না গোলাপ প্রতিটি ১০০-১২০ টাকা। গ্ল্যাডিওলাস কিংবা জারবেরার জৌলুস একই থাকলেও মূল্য দ্বিগুণ। তবে তাতে তেমন অভিযোগ নেই ফুলপ্রেমীদের। মেনে নিয়ে বলেন, একটি দিনের ব্যাপারই তো।
দামের ব্যবধানের ব্যাখ্যাও দিলেন ফুল দোকানিরা। বলেন 'সকাল-সন্ধ্যা ফুলের সাথে বসবাস আমাদের, সারাক্ষণ ফুলের ঘ্রাণ পাই। ভালোবাসা মানেই ফুল, তাই এইদিনগুলোতে বেচাকেনা ভালো হয়। তাই বাড়ে ফুলের দাম।'
একইসাথে জানাতে ভুললেন না, ফুল নিয়ে তাদের ভালোবাসার কথা। শুধু ব্যবসা নয়, কাঁচা রঙের ঘ্রাণ, পবিত্রতা আর সতেজতার আবেশে বেঁচে থাকার আনন্দের কথা।
তিন উৎসবের মিলন ঘিরে প্রায় ২০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা বণিক সমিতির। সামনে একুশে ফেব্রুয়ারি, স্বাধীনতা দিবস বা পহেলা বৈশাখের মতো উৎসবে ফুলের ব্যবসায় বার্ষিক আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলেও আশাবাদ বসন্ত দিনে।