শীতে খেজুরের রসে গলা ভেজাতে চান অনেকেই। গ্রামীণ জীবনে সহজে পাওয়া গেলেও এখন নগরবাসীরাও পাচ্ছেন তাজা রস। আর এখন অনলাইনে অর্ডার করেও ঘরে বসে রস পাওয়া যাচ্ছে।
পরিত্যক্ত খেজুর গাছ কাটার ব্যবস্থা করে নিজস্ব তত্ত্বাবধানে খেজুরের রস সংগ্রহের পর অনলাইনে বিক্রির মাধ্যমে স্থানীয়দের চাহিদা মেটাচ্ছেন ফেনীর কয়েকজন উদ্যোক্তা।
তাদেরই একজন সোনাগাজীর আদর্শ গ্রামের যুবক রহমত আলী। বছরের অন্য সময় ভিন্ন ব্যবসা করলেও শীতের পুরো মৌসুমে খেজুর রসের ব্যবসা করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে গত মৌসুমে কয়েক লাখ টাকার খেজুর রস বিক্রি করেছেন এই যুবক।
রহমত আলী বলেন, ‘গত বছর আমি প্রায় ২২ হাজার লিটার রস আহরণের মাধ্যমে সাড়ে তিন লাখ টাকার মতো আয় করেছি। এবার আরও বড় পরিসরে কাজ করছি।’
রহমত আলীর মতো বেশ কয়েকজন উদ্যোক্তা অনলাইনে রসের হাট জমিয়ে তুলেছেন। ভোরে গ্রামে গিয়ে গাছিদের কাছ থেকে রস সংগ্রহ করে ভোক্তাদের চাহিদামতো পৌঁছে দিচ্ছেন তারা। অনলাইনে প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকার খেজুর রস বিক্রি হয়।
অনলাইনের রস বিক্রেতারা বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি কিভাবে সহজে মানুষের কাছে রস পৌঁছে দেওয়া যায়। যারা হোম ডেলিভারি নিতে চায় তাদেরকে পৌঁছৈ দিই আবার অনেকে সরাসরি এসে রস সংগ্রহ করে।’
গ্রাম থেকে রস সংগ্রহের পর হোম ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত করছেন রহমত আলী
তবে এসব রস থেকে যাতে নিপাহ ভাইরাস না ছড়ায় সে বিষয়ে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করেছেন উদ্যোক্তারা। সেজন্য রসের পাত্র জাল দিয়ে ঢেকে রাখছেন তারা।
শহরে বসে গ্রামের খেজুরের রস খেতে পেরে উচ্ছ্বসিত ভোক্তারা। তারা বলেন, ‘খুব সহজে অনলাইনে অর্ডার করে আমরা রস খেতে পারছি। আর অনলাইনে বেচাকেনা হওয়ায় শহরবাসীর কাছে খেজুর রস সহজলভ্য হয়ে উঠেছে।'
অনলাইনে বিক্রি বাড়ায় খেজুর গাছ রোপণ ও রসের আহরণ বেড়েছে। কৃষি বিভাগ জানায়, উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজারের মতো খেজুর গাছ রয়েছে। এর মধ্যে রস সংগ্রহের জন্য ১৮ হাজারের মতো গাছ কাটা হয়।
সোনাগাজী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মাইন উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সোনাগাজীতে অনেক খেজুর গাছ রয়েছে। দিন দিন রস সংগ্রহ ও বেচাকেনায় মানুষের অংশগ্রহণ বেড়েছে।’