কানাডাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান অ্যালিড মার্কেট রিসার্সের তথ্য বলছে বিশ্বে বছরে প্রায় ২১০ কোটি পিস ডেনিম পোশাক বিক্রি হয়। আর ইউরোপে ব্যবহার হওয়া তিনটি ডেনিমের মধ্যে একটি তৈরি হয় বাংলাদেশে। এমন বাস্তবতায় ২০২০ সাল থেকে টানা তিন বছর ডেনিম সাম্রাজ্যের রাজত্ব করছে বাংলাদেশ। ইউরোপে ডেনিম ব্যবহারের কোন ছবি দিয়ে শুরু করলে ভালো হয়।
ডেনিম রপ্তানিতে দেশের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম ইপিজেডের প্যাসিফিক জিন্স। দেশের সর্বোচ্চ রপ্তানি পদক পাওয়া এই প্রতিষ্ঠানের ইউনিভার্সেল কারখানায় ৮ হাজার শ্রমিক প্রতিদিন তৈরি করেন ৪৭ হাজার পিস প্যান্ট।
এছাড়া দেশি মালিকানাধীন অন্তত ৪০টি প্রতিষ্ঠান ডেনিম ফেব্রিক্স উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত। এ খাতের বিনিয়োগ ১৬ হাজার কোটি টাকা।
বছরজুড়ে চাহিদা থাকায় জিন্সের শীর্ষ ব্র্যান্ড এইচঅ্যান্ডএম, সিঅ্যান্ডএ, জেসি পেনি, টেসকো, জারার মত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে ডেনিম সংগ্রহ করে। এছাড়া দিন দিন দেশের বাজারেও বেড়েছে এর চাহিদা। উদ্যোক্তারা বলছেন গুণগত মান আর কম দামের কারণে বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের এই শক্ত অবস্থান।
প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের হেড অব সাসটেইনেবিলিটি আনওয়ারুল ইসলাম বলেন, 'অন্যান্য দেশের তুলনায় বায়াররা এখান থেকে কম টাকায় নিতে পারে। আমরা এখন প্রায় ৩০ শতাংশ লোকাল থেকে ফেব্রিক্স সোর্স করি। তাই কম সময়ের মধ্যে মাল জাহাজে প্রেরণ করা সম্ভব হয়।'
২০২২ সালে বিশ্বে ডেনিমের বাজার ছিলো সাড়ে ৬ হাজার কোটি ডলার। প্রতি বছর যা ৪ শতাংশ হারে বাড়ছে। সে হিসেবে ২০২৬ সাল নাগাদ ডেনিমের বৈশ্বিক বাজার সাড়ে ৭ হাজার কোটি ডলার ছাড়াবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। যার নেতৃত্ব দেবে বাংলাদেশ।
প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা সাদিন তৈয়ব বলেন, 'জাপান কিংবা কোরিয়ায় কিন্তু সচেতন কোয়ালিটিতে নেই। কোয়ালিটি যারা ভালো দিতে পারবে তারাই বিশ্ব বাজারে টিকে থাকবে। গার্মেন্টসের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটা ব্র্যান্ডের নাম। বাংলাদেশের প্রোডাক্ট মানুষ খুঁজে নেয়। এখন আর পরিচয় করিয়ে দিতে হয় না।'
২০২১ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকার ডেনিম বাজারে ১৯৭ কোটি ডলার। ২০২২ সালে যা বেড়ে হয় ২৪৯ কোটি ডলার।