অর্থনীতি
0

'দেশে খেলাপি ঋণ এখনও অনিয়ন্ত্রিত'

২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ২৪টি বড় ধরনের ঋণ অনিয়মের মাধ্যমে ব্যাংকিং খাত থেকে ৯২ হাজার কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ হয়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ। এখনই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শক্ত পদক্ষেপ না এলে ব্যাংকিং খ্যাতে সংকট বাড়ার ইঙ্গিত দিল সিপিডি।

বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ নানা সংকটে চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দেশের আর্থিকখাত। সবশেষ এক থেকে দেড় বছর ধরে মূল্যস্ফীতির লাগাম টানা যাচ্ছে না। ব্যাংক খাতের অনিয়ম বন্ধ ও সংস্কারে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। তবুও নিয়মে বাধা যাচ্ছে না ব্যাংকিং খাতকে। যার ফলশ্রুতিতে বাড়ছে ঋণখেলাপি ও মূল্যস্ফীতি।

দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) 'বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০২৩-২৪; চলমান সংকট ও করণীয়' শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন করে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি। নিজেদের কার্যালয়ে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয় অর্থনীতির নানা বিষয়।

সিপিডি বলছে, খেলাপি ঋণ এখনও অনিয়ন্ত্রিত। এটি আর্থিক খাতের জন্য হুমকি। শক্তিশালী পদক্ষেপ ও সংস্কারের অভাবে দেশের ব্যাংকিং খাত ধারাবাহিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে। খেলাপি ও আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিযেছে সংস্থাটি।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, 'ব্যাংকিং খাত বর্তমানে গুটিকয়েক মানুষের হাতে। যার ফলে এখানে সমস্যা উত্তরণের পরিবর্তে আরও ঘনীভূত হচ্ছে।'

সংবাদ সম্মেলনে সিপিডি তুলে ধরে বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের মাধ্যমে গেলো ১৫ বছরে ব্যাংক খাত থেকে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকার হদিস নেই। ২০০৮ সালে খেলাপির ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার কোটি টাকা। যা বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকায়।

অভ্যন্তরীণ যে আয় হচ্ছে, তা সরকার পরিচালনায় খরচ হচ্ছে উল্লেখ করে সিপিডির গবেষক জানান, ঋণের টাকায় বাস্তবায়ন হচ্ছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি। যা ঋণের ফাঁদ তৈরি করেছে। এদিকে রাজস্ব আহরণও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় নেই।

ডলার সংকট কাটাতে বৈধপথে রেমিট্যান্স আনার গতি আরও বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে সিপিডি বলছে, বছর বছর বিদেশে কর্মী বাড়লেও সে তুলনায় রেমিটেন্স বাড়ছে না। প্রবাসী আয় বৈধপথে আনতে আরও সুযোগ দেয়া উচিত ব্যাংকগুলোকে।

সিপিডি গবেষক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, 'বৈধপথে যে রেমিট্যান্স আসছে, অবৈধপথে তার তুলনায় বেশি টাকা আমাদের মানুষের হাতে আছে।'

তবে গতবছরের তুলনায় কর আদায় বেড়েছে ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ। সঞ্চয়পত্রের উপর নির্ভরতা কমলেও ব্যাংক ঋণে নির্ভরতা বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শক্তিশালী নীতিমালা এখন না করলে, সংকট আরও ঘনিভূত হবে বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

এসএস

আরও পড়ুন: