৩৫ বছর ধরে হাতে তৈরি জুতা তৈরি করেন মঙ্গল সাহা। শুরুতে একা কাজ করলেও এখন তার কারখানায় কর্মসংস্থান হয়েছে আরও তিন জনের। দীর্ঘ কর্মজীবনে তার কাজের সুনাম ছড়িয়েছে জেলার বাইরেও। তাই তো ঈদ আসলেই বিভিন্ন বয়সী মানুষের ভিড় করেন শেরপুর শহরের অষ্টমিতলায় মঙ্গল সাহার জুতার কারখানায়।
জেলার জুতা তৈরির কারখানায় দেখা যায়, হাতুড়ির শব্দে জুতা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা। কেউ সোল কাটছেন, কেউ ঘষে আঠা দেয়ার কাজ করছেন। ডিজাইন ও ফিনিশিংয়ের কাজে দম ফেলার ফুরসত কম। কারিগররা বলছেন, হাতে জুতা তৈরিতে রাবার কার্টিজ থেকে শুরু করে ফিনিশিং, প্রিন্টিং সবই হচ্ছে তাদের দক্ষ হাতের নিপুন ছোঁয়ায়। তবে কাঁচামালের বাড়তি দাম ভোগাচ্ছে তাদেরকে।
কারিগরদের মধ্যে একজন বলেন, 'ঈদ উপলক্ষ্যে কাজের চাপ অনেক বেড়ে যায়। কিন্তু আমরা আশাবাদী যেন দিনে রাতে কাজ করে এবার সবার হাতে হাতে পণ্য পৌঁছাতে পারি।'
অন্য একজন কারিগর বলেন, 'চাপ বেশি কিন্তু সেই তুলনায় কারিগর একটু কম। মহাজন যেটুকু বেতন দেয় তা দিয়ে সংসার চলে ভালোই।'
কারখানা মালিকদের একজন বলেন, 'সরকার থেকে যদি আমাদের ঋণ দিতো তাহলে মরা সেটা ব্যবসা করে ভালো করতে পারতাম।'
এদিকে বিসিক কর্মকর্তা বলছে, জুতা তৈরির কারিগরদের স্বল্প সুদে ঋণের পাশাপাশি যেকোনো সহযোগিতায় পাশে আছেন তারা।
শেরপুর বিসিক শিল্পনগরীর কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান বলেন, 'আমাদের জেলা কার্যালয় থেকে ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থা আছে। ক্ষুদ্র এবং কুটির শিল্পের উদ্যোক্তাদের জন্য। এখান থেকে ৫০ হাজার থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিয়ে থাকি।'
তবে আধুনিকতার এই যুগে স্বয়ংক্রিয় মেশিনের সাথে পাল্লা দিয়ে পেরে উঠছেন না হাতে জুতা তৈরির কারিগররা। এছাড়া চায়না জুতা বাজার দখল করায় হাতে তৈরি জুতার চাহিদা আগের তুলনায় বেশ কমেছে।