৩ বছরের ভূমি নামের এক শিশু বাংলা বর্ণমালা শিখছে কেবল। মায়ের মুখে শুনে আধো আধো কিছু শব্দ ফুটেছে তার মুখে। হাতে আঁকা সেসব বর্ণমালার দিকে কৌতুহলী চোখে তাকিয়ে আছে ভূমি।
তার বোন জলেরও মনেও নানারকম জিজ্ঞাসা বাংলার জন্য ভাষা শহীদদের বীরত্ব গাঁথার সেই দিনগুলো নিয়ে। অভিভাবকরা চান এভাবেই তাদের সন্তানরা ধীরে ধীরে জানুক বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের ইতিহাস।
ভূমির মা বলেন, 'বাংলা কী, বাংলা কেন ও কিভাবে পেয়েছি আমরা, সে অনুভূতিটা তাদের কাছে থাকবে না। তারা যেন বাংলাকে না ভুলে যায় সেজন্য আরও ছোট থেকে প্রতিবছরই তাদের নিয়ে আসি।'
নিরাপত্তার স্বার্থে একুশে ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের প্রবেশপথগুলো। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পর খুলে দেয়া হয় সর্বসাধারণের জন্য।
কিছুক্ষণের মধ্যে মিনার অভিমুখে ঢল নামে মানুষের। খালি পায়ে সারিবদ্ধ হয়ে রওনা করেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। শারীরিক সীমাবদ্ধতা নিয়েও এসেছেন কেউ কেউ।
একজন শিক্ষার্থী বলেন, 'ভাষা সৈনিকদের সম্মান দিতে আমি এখানে এসেছি। আমার দেশ বাংলাদেশ, আমার ভাষা বাংলা ভাষা।'
প্রবাসী বাংলাদেশি কিংবা বিদেশিদেরও দেখা মিলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায়। ভুলেননি শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে।
বায়ান্নের ভাষা আন্দোলনে যেমন সকল শ্রেণি পেশার মানুষ এক হয়েছেন, জীবন দিয়ে আদায় করেছেন অধিকার। তেমনি আজও সেসব ভাষা শহীদদের স্মরণে সর্বসাধারণ জড়ো হয়েছেন এক ময়দানে। কন্ঠে চির অম্লান রেখেছেন বাংলা ভাষাকে।