প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার বহিরাগত লোকজন নিয়ে শহরের মধ্য বাঞ্চানগর এলাকায় সেন্ট মার্টিন কমিউনিটি সেন্টারের ভবনটি দখল করেন গ্রেপ্তারকৃতরা। এসময় তাদের সাইনবোর্ড খুলে মেসার্স আনোয়ার ট্রেডার্স লেখা সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয় তারা।
পরে ভবনের সামনে দশটি ট্রাক ও ডাম্প ট্রাক রেখে সামনের অংশ দখল করে রাখে। রাতেই ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মো. মাঈন উদ্দিন বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় আনোয়ারসহ চার জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৪৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। উল্লিখিত অন্যরা হলেন লক্ষ্মীপুর পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক লোকমান হোসাইন, রিয়াজ ও ইউসুফ।
গ্রেপ্তার আনোয়ার রায়পুর উপজেলা বামনী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি মেসার্স আনোয়ার ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী। গ্রেপ্তারকৃত অন্যদের মধ্যে তামিম হোসেন, লিটন হোসেন, ফরহাদ হোসেন, মো. মামুন, বেল্লাল হোসেন, মানিক হোসেন, আব্দুল আজিজ রাব্বিসহ ৪০ জন।
জমির মালিক মাঈন উদ্দিন জানিয়েছেন, তিনি একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে ওই জমির কাগজপত্র জমা দিয়ে নয় কোটি টাকা ঋণ নেয়। ধারদেনায় পড়ে তিনি জমিটি বিক্রির জন্য আনোয়ারের সঙ্গে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা মূল্য নির্ধারণ করে। এতে ২৮ লাখ টাকা দিয়ে একটি নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে বায়না চুক্তি করা হয়।
ব্যাংকের জটিলতা শেষ করে আনোয়ারকে জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ব্যাংকের সমস্যা সমাধান হয়নি। এরমধ্যেই জমিটি দখলে নিতে আনোয়ার অবৈধভাবে পাঁয়তারা করে আসছিল।
জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে বায়না হলেও তা রেজিস্ট্রি ছিল না। বায়নার সময় ২৮ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। পরে মাঈন উদ্দিন লভ্যাংশ হিসেবে টাকা ফেরত দিতে চাইলে আনোয়ার নেয়নি।
মাঈন উদ্দিন আরো জানান, অবৈধভাবে ভাড়াটে ক্যাডারদের এনে আনোয়ার আমার সম্পত্তি দখল করেছেন। আমার ভবনে সেন্ট মার্টিনের সাইনবোর্ড ছিল, তিনি তা সরিয়ে নিজের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে।
দখলের পর আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘নয় মাস আগে ২৮ লাখ টাকা দিয়ে জমি কেনার জন্য মাঈন উদ্দিনের সঙ্গে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে বায়না করেছি। চুক্তি অনুযায়ী তিনি আমাকে ভবনসহ জমি বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। প্রায় ৪ কোটি টাকা আমার ব্যাংকে পড়ে আছে। তা আমি উত্তোলন করতে পারছি না। চুক্তির ভিত্তিতেই আমি ভবনসহ জমি দখল করেছি।’
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ‘ভবন দখলের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আনোয়ারসহ ৪১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। জড়িত অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে।’