কিশোরগঞ্জে কৃষক মনির হত্যা মামলায় ১৩ জনের যাবজ্জীবন

এখন জনপদে
অপরাধ ও আদালত
0

জমিজমা সংক্রান্ত দীর্ঘদিনের পারিবারিক বিরোধ রক্তাক্ত সংঘর্ষে রূপ নিয়েছিল। প্রাণ হারান কৃষক মনির মিয়া। সেই হত্যার বিচারিক প্রক্রিয়ার পর অবশেষে আদালতের রায়ে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত হলো। কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে ঘটে যাওয়া আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের মামলায় ১৩ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আজ (বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ নূরুল আমিন বিপ্লব এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের সময় আসামিরা সবাই আদালতে উপস্থিত ছিল।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, করিমগঞ্জ উপজেলার ভাটিয়া-মীরপাড়া গ্রামের কৃষক মনির মিয়ার সঙ্গে তার চাচাতো ভাই ও অন্যান্য আত্মীয়দের দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। প্রায়ই এ নিয়ে বাকবিতণ্ডা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটত।

২০২০ সালের ১০ এপ্রিল বিকেল চারটার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছে। একপর্যায়ে ১৪-১৫ জনের একটি দল মনির মিয়া ও তার সহযোগীদের ওপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলে পড়ে। রক্তাক্ত হন মনিরসহ আরও দুইজন। গুরুতর আহত অবস্থায় মনিরকে ঢাকায় পাঠানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ এপ্রিল তার মৃত্যু হয়। নিহত মনির মিয়া ছিলেন মৃত মো. গনি মিয়ার ছেলে।

মনিরের ছোট ভাই আইন উদ্দিন ওই রাতেই করিমগঞ্জ থানায় ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে করিমগঞ্জ থানার ওসি-তদন্ত নাহিদ হাসান সুমন একমাত্র নারী আসামি লুৎফাকে বাদ দিয়ে বাকি ১৩ জনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

প্রায় চার বছর ধরে চলা বিচারিক প্রক্রিয়ার পর আজ আদালত এ মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন বলেন, 'দোষীদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে, তাই আদালত তাদের সবাইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। ফলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।'

একই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড এলাকায় আলোড়ন তোলে। হত্যার পর থেকেই বিচারপ্রক্রিয়ার দিকে তাকিয়ে ছিল মনিরের পরিবার ও স্থানীয়রা।

রায় ঘোষণার পর মনিরের পরিবারের সদস্যরা সন্তোষ প্রকাশ করে।

এ রায়ের মাধ্যমে কিশোরগঞ্জের আলোচিত এক হত্যাকাণ্ডের বিচারিক নিষ্পত্তি ঘটল। তবে এ ধরনের জমি সংক্রান্ত পারিবারিক বিরোধের নিষ্ঠুর পরিণতি যেন আর না হয়, সে আশাই করছেন স্থানীয়রা।

ইএ