মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার মজুমদারকান্দি গ্রামে মুন্নি বেগমের আর্তনাদ। আর্থিক সচ্ছলতার আশায় ঝুঁকি নিয়ে অবৈধ পথে লিবিয়া যাত্রা করেছিল তার স্বামী সুজন হাওলাদার। গেল ২২ জানুয়ারি জমজ দুই সন্তান আর স্ত্রীর সাথে শেষ কথা হয়েছিল তার। কিন্তু অবৈধ পথে ইতালি যেতে নৌকাডুবিতে ভূমধ্যসাগরে মৃত্যু হয় সুজনের। মাথায় ঋণের বোঝা আর দুই সন্তানকে নিয়ে অনাগত ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তায় স্ত্রী মুন্নি।
সুজনের মত মাদারীপুরের রাজৈরের ১৩ পরিবার আর গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের চার পরিবারের একই অবস্থা। ভাগ্য বদলাতে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন সাগর পথে। ডুবে তলিয়ে যায় নৌকায় থাকা সবাই। এর মধ্যে ২৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হলেও বাকিদের সন্ধান এখনো মেলেনি। দালালদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে পরিবারগুলো।
অবৈধ পথে মানব পাচার রোধে দালালদের আটকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ। আর জেলা প্রশাসন বলছে, প্রবাসী আইন অনুযায়ী নিহতদের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করবে সরকার।
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহফুজুল হক বলেন, ‘আমরা চারজনকে পেয়েছি যারা আসলেই মারা গেছেন। বাকি যে ৬ জন তাদের বিষয়টি পরিবারও নিশ্চিত করতে পারেনি এবং আমরা স্থানীয়ভাবে নিশ্চিত হতে পারিনি।’
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. সাইফুজ্জামান বলেন, ‘ওনারা যখনই চাইবেন তখনি মামলা করতে পারবেন। মামলা করার বিষয়ে আইনগত কোনো বিধিনিষেধ নেই এবং আমাদের পক্ষ থেকেও কোনো বাধা নেই।’
প্রবাসী অধ্যুষিত মাদারীপুরের রাজৈরে অবৈধ পথে দিন দিন ইতালি যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। অবৈধ পথে বিদেশ যাওয়া ঠেকাতে স্থানীয়দের নিয়ে জনসচেতনতামূলক সভা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।