হাতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে কালো মাইক্রোবাস থেকে নামলেন কয়েকজন যুবক। হেঁটে সিসিটিভির আওতার বাইরে চলে গেল। মুহূর্তেই আশেপাশে সবাই দৌড়ে পালাতে লাগলে। এরপরই আগ্নেয়াস্ত্র হাতে যুবকেরা এসে মাইক্রোবাসে চেপে পালিয়ে গেলো। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন ছোট সাজ্জাদ তার সহযোগীদের নিয়ে নগরীর শমসের পাড়ায় আফতাব উদ্দিন তাহসিন নামের এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা করেছেন।
পরের দৃশ্যপট গেটের বাইরে একটি অটোরিক্সা এসে দাঁড়ায়। সেটি থেকে তিন যুবক মুখে মাস্ক পরে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে ঢুকে পড়ে ভেতরে। অপর ফুটেজে দেখা যায় ভেতরে ঢুকেই আগ্নেয়াস্ত্র হাতে সবাইকে হুমকি ধামকি দিতে থাকেন। এখানেও নেতৃত্বে ছোট সাজ্জাদ।
আরেকটি ফুটেজে দেখা যায় দলবল নিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র হাতে হেঁটে যাচ্ছেন বেশ কিছু যুবক। যাদের দুজনকে আরেকটি ফুটেজে দেখা যায় একটি সিঁড়ি বেয়ে ধারালো অস্ত্র হাতে নেমে যেতে। পরেই মুহুর্মুহু গুলির আওয়াজ। গুলি করার সাদৃশ্যও ধরা পড়ে আরেকটি ক্যামেরায়।
সাম্প্রতিক এসব ঘটনায় নাম এসেছে বায়েজিদ অক্সিজেন এলাকার ত্রাস ছোট সাজ্জাদের। যে বিদেশ পলাতক সাজ্জাদ হোসেনের সহযোগী বলে এলাকায় পরিচিত। মঙ্গলবার এই ছোট সাজ্জাদ ফেসবুক লাইভে এসেই বাইজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুর রহমানকে প্রকাশ্যে পেটানোর হুমকি দেন। প্রয়োজনে মারা যাবেন তবুও পুলিশের কাছে হার মানবেন না বলেও প্রতিজ্ঞা করেন। ওসিকে মারার এমন হুমকিতে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে পুরো নগরীজুড়ে।
অভিযুক্ত সাজ্জাদ হোসন ফেসবুক লাইভে বলেন, ‘সুষ্ঠু বিচার হলে তোরা বেঁচে যাবি আর আইনের আড়ালে গেলে আমার হাত থেকে তোদের কেউ বাঁচাতে পারবে না, যেখানে থাকিস না কেন আমি তোরে ধরে পিটাবো। তোদের মেরে আমি মরব।’
এ ঘটনায় নিজ থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে হয়েছে খোদ ওসিকে।
সিএমপি উপ কমিশনার মো. রইছ উদ্দিন বলেন, ‘এ সংক্রান্ত যে আইনগত ব্যবস্থা রয়েছে তা চলমান রয়েছে। যেহেতু এটা হুমকির ইস্যু তাই বায়েজীদ থানায় এ সংক্রান্ত একটা সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। আমাদের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে। দ্রুত আমরা তাকে আইনের আওতায় আনতে পারব বলে বিশ্বাস করি।’
পুলিশ জানায়, দুই দিন আগে নগরীর বায়জিদ থানায় অভিযান চালিয়ে তার সহযোগী ৬ জনকে অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছে। মাস খানেক আগে অক্সিজেন এলাকায় একবার সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করতে গেলে গুলি করতে করতে পালিয়ে যায়। সে ঘটনায় আহত হন বেশ কয়েকজন। তার বিরুদ্ধে হাটহাজারি, বায়েজিদ থানায় একাধিক চাঁদাবাজি ও হত্যা মামলা আছে
সিএমপি উপ কমিশনার মো. রইছ উদ্দিন বলেন, ‘ তার বিরুদ্ধের যেহেতু একাধিক হত্যা, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন ধরনের অপরাধের মামলা রয়েছে, সেগুলো সংক্রান্ত যে আইনগত ব্যবস্থা বিশেষ করে তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা প্রক্রিয়া রয়েছে সে ব্যাপারে আমরা কাজ করছি।’
তবে লাইভে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের কারণে স্ত্রীর গর্ভের সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ করেন সাজ্জাদ। এ ঘটনায় আদালতে ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন তার স্ত্রী।