এখন জনপদে
অপরাধ ও আদালত
0

শ্যামনগরে বিএনপির দু’পক্ষের কর্মসূচি ঘিরে সংঘর্ষ, ১৪৪ ধারা জারি

সাতক্ষীরা শ্যামনগরে একই স্থানে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের কর্মসূচি থাকায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। আজ (বুধবার, ২২ জানুয়ারি) বিকাল চারটা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সমাবেশ ও আলোচনা স্থলসহ পুরো পৌর এলাকাকে এ নির্দেশনার আওতায় আনা হয়েছে। সব শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শ্যামনগরের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে হয়েছে।

শ্যামনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজ চারটার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

উপজেলা প্রশাসন পক্ষ থেকে সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানা গেছে, আজ (বুধবার, ২২ জানুয়ারি) বিকালে শ্যামনগর সদরের এম এম প্লাজার পাশে কৃষক দলের কার্যালয়ের সামনে উপজেলা ও পৌর বিএনপির আনন্দ মিছিলের সঙ্গে সমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপির একাংশ।

অন্যদিকে দলটির আরেক অংশ একই সময়ে ওই স্থানে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফার কর্মশালা ও লিফলেট বিতরণের প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কোনো পক্ষকেই কর্মসূচি পালন করতে দেয়া হয়নি। উভয়পক্ষ একই স্থান ও সময়ে সম্মেলন কিংবা আলোচনা সভা আয়োজন করলে সেটা সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্ন এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। তাই শ্যামনগর পৌরসভা এলাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. রনী খাতুন ১৪৪ ধারা জারি করেন।

বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ জানুয়ারি রাতে দীর্ঘ ১৪ বছর পর সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা বিএনপির ৪৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন করা হয়। এছাড়া ঘোষণা করা হয়েছে শ্যামনগর পৌরসভা বিএনপির ৩৩ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপি। আর এর পর থেকে শ্যামনগরে কমিটির পক্ষে-বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি মিছিল সমাবেশ হয়ে আসছে। এছাড়াও কমিটি গঠন ঘিরে টানা কয়েকদিন ধরেই শ্যামনগর উপজেলায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এরমধ্যেই মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) শ্যামনগর উপজেলার পূর্ববর্তী ও নতুন ঘোষিত উভয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল আলীম।

পরে বুধবার (২২ জানুয়ারি) শান্তি সমাবেশের ঘোষণা দেয় সোলাইমান কবিরের গ্রুপ। অন্যদিকে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের কর্মশালা ও লিফলেট বিতরণের ঘোষণা দেয় সাবেক সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদের গ্রুপ। এই কর্মসূচি ঘিরে পৌর এলাকাজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে।

সবশেষ পাওয়া খবর অনুসারে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের কর্মসূচি শ্যামনগরের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ হয়েছে।

এদিকে বংশপুর ও ঈশ্বরীপুর এলাকা থেকে সোলায়মান কবীর গ্রুপের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে এলাকায় ফেরার পথে ইসমাইলপুর এলাকায় পৌঁছালে আশেক এলাহী মুন্নার বাড়ি থেকে ওই মিছিলে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাদে। সংঘর্ষে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিরাপত্তায় থাকা আনসার সদস্য সাইফুল ইসলাম, পথচারী রবিউল ইসলাম, মেহেদী হাসান, বিএনপি কর্মী আব্দুর রশিদসহ উভয় গ্রুপের কমপক্ষে ২০-২৫ জন আহত হয়।

এ বিষয়ে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. রনী খাতুন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মাঠে রয়েছে। রাজনৈতিক দলের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে শ্যামনগর পৌরসভা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

এএম