সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের কঠোর নিরাপত্তায় শুক্রবার বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম আদালতে আনা হয় চাঞ্চল্যকর আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনার প্রধান আসামি চন্দন দাস ও অপর আসামি রিপন দাসকে। এরপর নিয়ে যাওয়া হয় মেট্রোপলিটন বিশেষ আদালতে।
এ সময় রাষ্ট্র পক্ষ আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত প্রধান আসামি চন্দন দাসকে ৭ দিন এবং আরেক আসামি রিপন দাসের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে, এ সময় উপস্থিত ছিলেন না আসামিপক্ষের কোনো আইনজীবী।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন আমরা মনে করি সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের রিমান্ডের আবেদনের জন্য প্রসিকিউশনের সাথে আমরা অনুরোধ করেছি।’
রিমান্ড মঞ্জুর শেষে আসামিদের নিয়ে যাওয়ার সময় আদালত চত্বরে বিক্ষোভ করেন আলিফের আইনজীবীরা। এ সময়, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের পাশাপাশি ইসকন নিষিদ্ধের দাবি জানান। একইসাথে যাকে ঘিরে এমন হত্যাকাণ্ড সেই চিন্ময় কৃষ্ণকে হত্যা মামলায় আসামি না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
আলিফের সহকর্মী জানান, এ হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড কে এবং কাদের নির্দেশে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে সে তথ্য বের হয়ে আসুক।
জেলা পিপি ও সাধারণ সম্পাদক, ‘চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির জেলা পিপি ও সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফ হোসাইন চৌধুরী রাজ্জাক বলেন, সর্বোচ্চ ১০ দিনের রিমান্ড আমরা আবেদন করেছিলাম। আদালত সন্তুষ্ট হয়ে এক নম্বর আসামি চন্দনকে ৭ দিনের রিমান্ড এবং সংযুক্ত আসামী রিপনকে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন।’
বুধবার আইনজীবী আলিফ হত্যাকাণ্ডের মামলার প্রধান আসামি চন্দন দাসকে কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অপর আসামি রিপন দাসকে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের আনোয়ারা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আলিফ হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজে এই দুই আসামি অস্ত্র হাতে সরাসরি অংশ নেয়, দাবি পুলিশের।
সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার শাকিলা সোলতানা বলেন, ‘কেন হত্যা করেছে এটা তদন্তের ব্যাপার। এখন পর্যন্ত আমরা রিমান্ডে নিয়ে আসামীদের কাছ থেকে প্রকৃত তথ্য পাব। আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ এখনো শেষ হয় নি।’
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর হওয়াকে কেন্দ্র করে গত ২৬ নভেম্বর আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় আইনজীবী আলিফকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়।