গ্যাসের চাপ কমায় তিতাসে উৎপাদন হ্রাস; ওয়েলহেড কম্প্রেসরে মিলছে বাড়তি গ্যাস

তিতাস গ্যাস ফিল্ড
তিতাস গ্যাস ফিল্ড | ছবি: এখন টিভি
0

তিতাস গ্যাস ফিল্ডে গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় উৎপাদন হ্রাস পেয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জাতীয় গ্রিডের চাপের সঙ্গে সমন্বয় করে স্থাপন করা হয়েছে ওয়েলহেড কম্প্রেসর। এর ফলে তিতাসের পাঁচটি কূপ থেকে প্রতিদিন অতিরিক্ত ২২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে। এছাড়া বন্ধ কূপ পুনরায় চালু করা এবং সামগ্রিক উৎপাদন বাড়াতে একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল)।

দেশের সবচেয়ে বড় তিতাস গ্যাস ফিল্ডের উৎপাদনে থাকা ২২টি কূপ থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩৩৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে। তবে মজুত কমায় কমেছে গ্যাসের চাপ।

জাতীয় গ্রিডে গ্যাসের চাপ ৬০০ পিএসআই থাকলেও তিতাসের বেশিরভাগ কূপ থেকে সেই চাপে গ্যাস তোলা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় জাতীয় গ্রিডের চাপের সঙ্গে সমন্বয় করে গ্যাস উত্তোলনে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ১১, ১২, ১৭, ১৮ এবং ২৭ নম্বর কূপের জন্য ওয়েলহেড কম্প্রেসর স্থাপন প্রকল্প নেয় বিজিএফসিএল।

সম্প্রতি প্রকল্পের কাজ শেষে পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর কূপগুলো থেকে অতিরিক্ত আরও ২২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস তুলে দেয়া হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে।

৫৬১ কোটি টাকা ব্যায়ে তিতাসের লোকেশন ই-তে বসানো তিনটি কম্প্রেসরের প্রতিটি ৪০ মিলিয়ন এবং জি-তে বসানো বাকি তিনটির প্রতিটি ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলনে সক্ষম। এর মাধ্যমে গ্যাসের উৎপাদন স্বাভাবিক থাকবে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ওয়েলহেড কম্প্রেসর স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মামুন আজাদ বলেন, ‘এ কূপগুলো থেকে আমার মোট উৎপাদনের হার ছিল প্রায় ৩৯ মিলিয়ন ঘনফুট। আর এটা যুক্ত করার ফলে, এই কম্প্রেশারগুলো অপারেশনে আসার ফলে অতিরিক্ত ২২ মিলিয়ন ঘনফুট বেশি আমরা সরবরাহ করতে পারছি। এতে আমার মোট ৬১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে।’

আরও পড়ুন:

তবে শুধু তিতাসই নয়, বিজিএফসিএল পরিচালিত হবিগঞ্জ, বাখরাবাদ, নরসিংদী ও মেঘনা ফিল্ডয়েও কমেছে গ্যাসের উৎপাদন। উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে ইতোপূর্বে নরসিংদী গ্যাস ফিল্ডেও ওয়েলহেড কম্প্রেসর স্থাপন করে বিজিএফসিএল কর্তৃপক্ষ।

জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে তিতাসের বন্ধ কূপগুলোয় ওয়ার্কওভারের পাশাপাশি বিজিএফসিএল পরিচালিত গ্যাস ফিল্ডগুলো থেকে উৎপাদন বাড়াতে নানা প্রকল্প নেয়ার কথা জানান ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমরা একটা সার্ভে প্রোজেক্ট নিয়েছি। এখানে এর আন্ডারে ১ হাজার ৪৫০ বর্গকিলোমিটার এরিয়ায় সার্ভে হবে। সেই সার্ভের মাধ্যমে আমরা হয়তো জানতে পারবো যে, আমাদের নতুন কোনো রিসোর্স বা রিজার্ভ আছে কি না, থাকলে সেটার স্ট্রাকচার কেমন, সেখানে গ্যাসের উপস্থিতি কেমন? আমরা যখন আমাদের রিপোর্টটা হাতে পাবো, সেটার ওপর ভিত্তি করে আমরা আরও নতুন নতুন কূপ খননের উদ্যোগ নেবো।’

১৯৬২ সালে তিতাস গ্যাস ফিল্ড আবিস্কার করে পাকিস্তান শেল ওয়েল কোম্পানি। বর্তমানে তিতাসের কূপগুলোতে মজুত আছে প্রায় ২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।

এসএইচ