করতোয়া নদীর তীরে গড়ে উঠেছিল প্রাচীন সভ্যতার নগরী পুন্ড্রবর্ধন—যা আজকের বগুড়া। একসময় বণিকের জাহাজ আর মাঝি-মল্লার জারিগানে মুখর থাকতো নদীপাড়। জেলেরা জাল ফেলে ধরতো নানা প্রজাতির মাছ। কিন্তু বর্তমানে দখল, দূষণ আর ভরাটে করতোয়া হারিয়েছে তার জৌলুস।
তবে বর্তমানে এ নদীকে আগের রূপে ফেরাতে প্রকল্প নিয়েছে সরকার। এরইমধ্যে নদীর কিছু অংশ খননসহ এসপি ব্রিজ থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পর্যন্ত ৭৩০ মিটার এলাকায় স্লোপ প্রটেকশন ও ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ উপভোগ করতে শুরু করেছেন শহরবাসী।
স্থানীয়দের একজন বলেন, ‘করতোয়ার পাশে এ জায়গাটি খুব ভালো হয়েছে। মানুষ সকালে বিকালে এখানে হাঁটাচলা করতে পারছে।’
বগুড়া বগুড়া লেখক চক্র সভাপতি ইসলাম রফিক বলেন, ‘নদীকে রক্ষার জন্য এ কাজ খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। যেটুকু করেছি শুধু এটুকু নয়, শহরকে নির্ভর করে নদীর দু’পাশ দিয়ে যদি হাঁটাচলার ব্যবস্থা করা যায় এতে শহরের সুন্দর্য বাড়বে। পাশাপাশি নদী রক্ষাতেও ভূমিকা রাখবে।’
আরও পড়ুন:
বগুড়া প্রেস ক্লাব সভাপতি রেজাউল হাসান রানু বলেন, ‘বগুড়াবাসীর যে আশা আকাঙ্ক্ষা নদীকে খনন করে দু’পাশ দিয়ে ওয়াকওয়ে করে সম্ভব হলে দু’পাশ দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা, এ চাহিদার যেন পূর্ণ করা হয়।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বলছেন, প্রকল্পে ৪৫ কোটি টাকার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। যার সুফল পেতে শুরু করেছেন স্থানীয়রা। তবে বরাদ্দের বাকি অর্থ না মেলায় বর্তমানে বন্ধ রয়েছে কাজ।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, ‘এরইমধ্যে এ প্রকল্পের সুফল এলাকাবাসী পেতে শুরু করেছে, জনগণ পাচ্ছে। এ প্রকল্পের ধারাবাহিকতায় আমরা বড় একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। যে প্রকল্পটি পুরো ১২৩ কিলোমিটার খনন করে করা হবে। এ প্রকল্পটি যদি আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলে মাটিডালি থেকে বনানি পুরোপুরি এলাকা দখল-দুষণমুক্ত হবে। সেই সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে।’
১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার একটি বৃহৎ প্রকল্পের আওতায় করতোয়া, ইছামতি ও গজারিয়া নদীর ২৩০ কিলোমিটার পুনঃখনন এবং শহরের ২৯ কিলোমিটার এলাকায় স্লোপ প্রটেকশন ও ওয়াকওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। মন্ত্রণালয়ে এখন সেই বরাদ্দ অনুমোদনের অপেক্ষায়।




