২২ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষ পর্যায়ে। ট্রলার মেরামত ও জাল-দড়ি গুছিয়ে সাগরে যাবার প্রস্তুতি শেষ করেছে বরগুনার উপকূলের জেলেরা। মধ্যরাতে নিষেধাজ্ঞা শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গে নদী ও সাগরে ছুটবেন তারা।
নিষেধাজ্ঞার আগে ইলিশের ভরা মৌসুমে আশানুরূপ মাছ না পেয়ে ধার-দেনায় জর্জরিত জেলেরা আশায় বুক বেঁধেছেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রচুর মাছ ধরা পড়বে তাদের জালে। তবে নিষেধাজ্ঞার সময়ে ভারতীয় জেলেরা অনুপ্রবেশ করে মাছ শিকার করায়, মাছ পাওয়া নিয়ে রয়েছে জেলেদের শঙ্কা।
স্থানীয় জেলেদের একজন বলেন, ‘ভারতীয় ট্রলারগুলো যে আমাদের দেশে এসেছে, আমাদের সরকার সেগুলো এতো বেশি ফেরাতে পারেনি।’
তবে জেলা মৎস্য কর্মকর্তার দাবি, ভারতীয় জেলেদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে মাঠ প্রশাসনের পাশাপাশি সাগরে কাজ করেছে নৌবাহিনী ও।
বরগুনার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো.মহসীন বলেন, ‘এ বছর সাগরে লুকিয়ে মাছ ধরার প্রবণতা খুব কম ছিলো। আমাদের নৌবাহিনীর ১৭টি জাহাজ সবসময় বঙ্গোপসাগরে ছিলো। কতিপয় কিছু মানুষ এসেছিলো তারা ধরাও পড়েছে।’
আরও পড়ুন:
এদিকে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আবারও নদীতে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন চাঁদপুরের জেলেরা। জাল সেলাই ও নৌকা মেরামতে এখন ব্যস্ত সময় কাটছে তাদের।
মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেরা জীবিকা হারিয়ে পড়েছিলেন চরম কষ্টে। নিষেধাজ্ঞা শেষ পর্যায়ে থাকায় জেলেদের মুখে এখন আশার হাসি। তবে নদীতে ইলিশের পরিমাণ ও দাম নিয়ে শঙ্কাও রয়েছে তাদের মনে।
নিষেধাজ্ঞা মানায় নদীতে ইলিশের প্রজনন বেড়েছে বলে আশা করছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, ‘জাটকাগুলোকে যদি আমরা সংরক্ষণ করতে পারি, তাহলে ইলিশ নিয়ে চাঁদপুর জেলার যে সুনাম সেটি অক্ষুণ্ণ থাকবে বলে মনে করি।’
চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মো. মোহসীন উদ্দীন বলেন, ‘মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম যেভাবে সফল হয়েছে, তাতে আগামী বছর আমি মনে করি ইলিশের উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি পাবে।’
পটুয়াখালীতেও জেলেরা জাল ও ট্রলার মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে নিষেধাজ্ঞার সময়টাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত সহায়তা মেলেনি বলে অভিযোগ রয়েছে জেলেদের।
জেলেরা জানান, তারা সরকারের মা ইলিশ রক্ষার কার্যক্রম মানছেন। কার্যক্রম চালু হওয়ার পর থেকেই জাল তুলে ফেলেছেন। তবে এ কার্যক্রম মেনে চললেও সরকারের দিক থেকে কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে জানান তারা।
ইলিশের বাধাহীন প্রজননের জন্য ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সাগর ও নদীতে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। এ সময় মাছ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিলো।





