বালু উত্তোলনে ময়মনসিংহ সীমান্তে ঝুঁকি, বরাক নদীতে দুই সীমানা পিলার বিলীন

অবাধে বালু উত্তোলনে ঝুঁকির মুখে সীমান্তের শূন্য রেখা-আন্তর্জাতিক সীমানা
অবাধে বালু উত্তোলনে ঝুঁকির মুখে সীমান্তের শূন্য রেখা-আন্তর্জাতিক সীমানা | ছবি: এখন টিভি
0

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের বরাক নদী ও ধোবাউড়া উপজেলার নেতাই নদে অবাধে বালু উত্তোলনের ফলে সীমান্তের শূন্য রেখা এবং আন্তর্জাতিক সীমানা ঝুঁকির মুখে পড়েছে। এরই মধ্যে হালুয়াঘাটের বরাক নদীতে দুটি সীমানা পিলার বিলীন হয়েছে এবং ধোবাউড়ার নেতাই নদীতে দুটি পিলার বিলীনের ঝুঁকিতে রয়েছে। আজ (শনিবার, ১৮ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে ময়মনসিংহ ব্যাটালিয়ন (৩৯ বিজিবি) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মেহেদী হাসান।

৩৯ বিজিবির মাল্টিপারপাস শেড সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড়ে সংবাদ সম্মেলনে মেহেদী হাসান বলেন, ‘সীমান্ত পিলার গুলো যেভাবে বিলীন হচ্ছে তাতে দেশের সীমানা নির্ধারণ করা দুষ্কর হয়ে যাবে। বিষয়টি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। অবৈধ বালু উত্তোলন অতিদ্রুত বন্ধ করতে না পারলে সিলেটের সাদা পাথর নিয়ে যে ঘটনা ঘটে গেছে, আমাদের সেই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।’

লিখিত বক্তব্যে বিজিবি অধিনায়ক জানান, সাম্প্রতিক সময়ে হালুয়াঘাটের বরাক নদীতে ইজারা বহির্ভূত এলাকা থেকে রাতের আধারে কিছু কুচক্রী মহল এবং অসাধু বালু ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ বালু উত্তোলন করছে। বরাক নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে বিভিন্ন স্থানে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে বাংলাদেশের মূল ভূ-খন্ডসহ কৃষি জমি, সীমান্ত পিলার ও স্থানীয় জনসাধারণের বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে আন্তর্জাতিক সীমারেখা পরিবর্তিত হওয়াসহ নানাবিধ জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেয়ার কথাও জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ইদানিং হালুয়াঘাটের যাটাপাড়া এলাকায় ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক কর্তৃক ইজারা প্রদানকৃত জায়গাটি মৌজা নং ১১১ বরাক ঘোষগাঁওয়ের অর্ন্তভূক্ত। তবে রাতের আধাঁরে স্থান পরিবর্তন করে ইজারাদার কর্তৃক অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগসাজসে ১০৭ ও ১০৮ নং মৌজা থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে, যা সীমান্তের নিকটবর্তী এবং ইজারা প্রদানকৃত জায়গার অর্ন্তভূক্ত নয়। 

আরও পড়ুন:

এক্ষেত্রে ১০৭ ও ১০৮ নম্বর মৌজার দুমনিকুড়া এলাকা থেকে রাতের আধারে ড্রেজার দিয়ে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন, যা পরবর্তীতে ইজারাকৃত জায়গার বৈধ বালু দাবি করে অবৈধভাবে পাচার করা হচ্ছে।

বিজিবি জানায়, গত ১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অবৈধ বালু পরিবহনের দায়ে ৮টি অভিযানের মাধ্যমে সর্বমোট ২৭ হাজার ৩৩০ ঘনফুট বালু জব্দ করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করা যাচ্ছে না। বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে এবং যৌথ অভিযান চলাকালে আটক বালুর শ্রমিক ও চালকদের সঙ্গে কথোপকথনে জানা যায়, মূলত ইজারাদারের পৃষ্ঠপোষকতায় বৈধ এবং অবৈধ উভয় পন্থায় বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ব্যাপকতা দিন দিন মারাত্মক আকার ধারণ করছে। 

এ প্রেক্ষিতে বিজিবির পক্ষে জেলা প্রশাসনকে লিখিত ও মৌখিকভাবে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে এবং সেখানে কিছু প্রস্তাবনা আমরা দিয়েছি। কেননা এটা বিজিবির একার পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।

এসএইচ