নাটোরের নারদ নদ নতুন রূপে; এক কিলোমিটারের বেশি এলাকা পরিষ্কার

নাটোরের ঐতিহ্যবাহী নারদ নদ পরিষ্কার অভিযান
নাটোরের ঐতিহ্যবাহী নারদ নদ পরিষ্কার অভিযান | ছবি: এখন টিভি
0

নাটোরের ঐতিহ্যবাহী নারদ নদ এখন যেন নতুন দৃশ্যপট। লেপ-বালিশ, কাঁথা, ককশিট, ফ্রিজ থেকে শুরু করে অজস্র পলিথিন সব সরিয়ে ধীরে ধীরে চেহারা বদলাচ্ছে নদের। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নদ পরিষ্কার অভিযানে এরইমধ্যে এক কিলোমিটারের বেশি এলাকা দৃশ্যমান হয়েছে।

ঝোপ-ঝাঁর আর আবর্জনায় আক্ষরিক অর্থেই ভাগাড়ে পরিণত হয় নাটোরের ঐতিহ্যবাহী নারদ নদ। কিন্তু গত মাসখানেক ধরে চলা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন অভিযানে বদলেছে সেই চিত্র। দুই চোখের দৃষ্টিসীমা যতদূর যায়, আবর্জনা সরিয়ে উন্মোচিত হচ্ছে নদের প্রকৃত রূপ। তবে দীর্ঘদিনের আবর্জনা আর ময়লা পরিষ্কার করতে গিয়ে উদ্ধার হয় লেপ-বালিশ, কাঁথা, ককশিট, পুরানো ফ্রিজ থেকে শুরু করে অজস্র পলিথিন। পলিথিনের স্তূপ সরাতেই নাকাল পরিচ্ছন্ন কর্মীরা।

পরিচ্ছন্ন কর্মীরা জানান, পুরাতন কাপড়সহ সব নিয়ে এসে এখানে ফেলে দেয়। ফলে নদ ভরাট হয়ে গেছে।

নান্দনিক নাটোর গড়ার অংশ হিসেবে গত ১৪ আগস্ট পরিচ্ছন্ন অভিযানের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন। এ কাজে এগিয়ে আসে জেলার ১৫টি সরকারি দপ্তরের পাশাপাশি ব্যবসায়ী সংগঠনও। প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ জন শ্রমিক অংশ নিচ্ছে নারদ নদ পরিষ্কারে।

এরইমধ্যে নদের এক কিলোমিটারের বেশি অংশে ময়লা-আবর্জনা সরানো সম্ভব হয়েছে। এতে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে নদকে ঘিরে নানা পরিকল্পনার দাবি জানায় নদীপারের মানুষ।

আরও পড়ুন:

স্থানীয়রা জানান, ‘নদটি খনন করে পার বাধাই করে সংরক্ষণ করতে হবে। পাশাপাশি প্রতিদিন অন্তত ১৫০ জন কর্মী নিয়োগ দিতে হবে। একইসঙ্গে নদীতে আর কোনো যেন ময়লা ঢেলা না হয় সে উদ্যোগ নিতে হবে।’

২০০৯ সালে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নারদ নদের উৎসমুখসহ ১৭ কিলোমিটার খনন হলেও প্রত্যাশিত সুফল পায়নি এলাকাবাসী। তবে এবার পরিষ্কার অংশ খননের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে পানির প্রবাহ ঠিক রাখা হবে বলে প্রত্যাশা নদীপারের মানুষের।

শুধু পরিষ্কার নয়, দীর্ঘমেয়াদি নদটি খননসহ নানা পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

নাটোর জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন বলেন, ‘যে জায়গাগুলো আমরা পরিষ্কার করেছি সেগুলো যেন সাসটেইনেবল হয় মানুষ যেন পুনরায় সেখানে ময়লা না ফেলে সেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করব। পাশাপাশি জনগণকেও সচেতন করার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’

রাজশাহীর ইউসুফপুর থেকে উৎপত্তি হয়ে গুরুদাসপুরের নন্দকুজা নদীতে মিলেছে নারদ নদ। ৭২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ নদীর অস্তিত্ব এখন মাত্র ৪৩ কিলোমিটার। তার মধ্যে প্রায় ১০ কিলোমিটার নাটোর শহরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত।

এফএস