সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা যায়, গত শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে মির্জাপুর মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজের পাইলিং করার সময় হঠাৎ গ্যাসের পাইপে খননযন্ত্রের আঘাত লাগে।
এতে পাইপ ফেটে বিকট আওয়াজ হয়ে গ্যাস বের হতে থাকে। খবর পেয়ে তিতাস কর্তৃপক্ষ শুক্রবার রাত ৮টার দিকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। পাশাপাশি লাইন মেরামতের জন্য তিতাসের লোকজন ঘটনাস্থলে আসেন। তবে গতকাল শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টা পর্যন্ত তা মেরামত করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্যাস-সংযোগ বন্ধ থাকায় মির্জাপুরের সোহাগপুর থেকে নাটিয়াপাড়া পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকার প্রায় দুই হাজার আবাসিক গ্রাহককে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তারা মাটি ও সিলিন্ডারের চুলায় রান্না করছেন। এ ছাড়া মির্জাপুরের গোড়াই শিল্পাঞ্চলের অন্তত ১০টি কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
বাইমহাটী পশ্চিমপাড়া এলাকার আফজার হোসেনসহ কয়েকজন জানান, পাইলিং কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছে যে, রাস্তার পাশ দিয়ে গ্যাসের প্রধান সঞ্চালন লাইন আছে।
তারপরও তারা ভেকু মেশিন দিয়ে তা লিকেজ করেছেন। তারা খামখেয়ালিপনা করে এমনটি করেছেন। তাদের কারণে সহস্রাধিক মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
কুমুদিনী হাসপাতালের উপপরিচালক অনিমেষ ভৌমিক বলেন, ‘গ্যাস না থাকায় কুমুদিনী হাসপাতাল, ভারতেশ্বরী হোমসসহ কমপ্লেক্সে অবস্থিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অন্তত ৫ হাজার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় গ্যাস জেনারেটরের মাধ্যমে হাসপাতালের রোগীদের বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হয়।
যা তেলের জেনারেটরে সম্ভব হয় না। গ্যাসের সংযোগ বন্ধের পর থেকে কয়েকবার বিদ্যুৎ চলে যাওয়াতে দুর্ভোগ আরো বাড়ছে।’
তিতাস টাঙ্গাইলের সহকারী প্রকৌশলী রমজান আলী জানান, ফেটে যাওয়া লোহার পাইপটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন। পাইপটি অন্তত ৩০ ফুট নিচে অবস্থিত। মসজিদের পাইলিং করার সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন পাইপটি ফাটিয়ে ফেলেছেন। ওই স্থানে গ্যাস লাইনের পাইপ রয়েছে বিষয়টি সবাই জানানো স্বত্বেও তিতাস অফিসে কাজের বিষয়ে লিখিত বা মৌখিকভাবে জানানো হয়নি। পাইপ ফেটে যাওয়ার পর আমাদের অন্তত দুই হাজার আবাসিক ও ১০টি কারখানার গ্রাহককে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’
তিতাস গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকার ব্যবস্থাপক কাউছারুল ইসলাম জানান, পাইপ ফেটে যাওয়াতে ক্ষয়-ক্ষতির সঠিক তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।
মুঠোফোনে গণপূর্ত বিভাগ টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী শম্ভু রাম পাল জানান, মডেল মসজিদ নির্মাণের স্থানে গ্যাসের পাইপ লাইন আছে তা তাদের জানা ছিল না। বিষয়টি ভুল হয়ে গেছে। দ্রুত যাতে পাইপ মেরামত করা যায় এজন্য তিনি তিতাসের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আরিফুল ইসলাম জানান, তিতাস অফিসের লোকজনের সঙ্গে গত শুক্রবার রাতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। তারা ফোন রিসিভ করেননি। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মাধ্যমে তিতাস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে লাইন মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে পাইলিংয়ের কাজ করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ছিল।
তিতাস টাঙ্গাইল জোনাল বিক্রয় অফিসের ব্যবস্থাপক মো. জুয়েল রানা বলেন, কাজ চলামান রয়েছে। এক দেড় ঘণ্টার মধ্যে গ্যাস চলাচল স্বাভাবিক হবে।





