নরসিংদীতে জেলা পরিষদের ১১ কোটি টাকার ৩০৭ প্রকল্পের হদিস নেই

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা কমপ্লেক্স
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা কমপ্লেক্স | ছবি: এখন টিভি
0

নরসিংদী জেলা পরিষদের অধীনে ১১ কোটি টাকার ৩০৭টি প্রকল্পের কোনো খোঁজ নেই। দুই অর্থবছর আগে খাতা-কলমে প্রকল্পগুলোর অনুমোদন হলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। কোটি কোটি টাকার এ প্রকল্পগুলো যাদের জন্য তাদের অনেকেই জানেন না এ সম্পর্কে। প্রকল্পের প্রায় ১১ কোটি টাকা কোথায় বা থলের বেড়াল কারা— সে প্রশ্নগুলোরই উত্তর খুঁজতে চেষ্টা করা হয়েছে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে নরসিংদী জেলা পরিষদের অধীনে রায়পুরা উপজেলার রামনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ৫ লাখ টাকা। তবে টাকা বরাদ্দ হলেও দেখা যায়নি কাজের দৃশ্যমান অগ্রগতি। প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়ায় বহিরাগত ও বখাটেদের প্রবেশও ঠেকাতে পারছে না স্কুল কর্তৃপক্ষ, এতে ব্যাঘাত ঘটছে পাঠদানে।

শিক্ষকদের মধ্যে একজন জানান, আবেদন করার পর ম্যানেজিং কমিটির একজন সদস্য তাকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন যে, আবেদনের প্রেক্ষিতে পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে।

স্থানীয়দের মধ্যে একজন জানান, পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দের ব্যাপারে শুনে তারা বেশ আশ্বস্ত হলেও এখনও সেটা বাস্তবায়ন না হওয়ায় হতাশ তিনি।

রায়পুরের মরজাল এলাকার লাকী ফাউন্ডেশনের এ বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণের টেন্ডার পাস হয় ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে, যার মূল্য ধরা হয় ৫ লাখ টাকা। কিন্তু বাস্তবে তার দেখা মেলেনি। নামমাত্র একটি ছোট দেয়াল দেখা গেলেও সেটি কোন খাতে নির্মাণ হয়েছে জানেন না স্থানীয়রা।

আরও পড়ুন:

এদিকে রায়পুরার আদিয়াবাদ এলাকার একটি সামাজিক কবরস্থানের চিত্রও একই। ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ হলেও সেখানেও নেই চোখে পড়ার মত কর্মতৎপরতা। কেউ জানেন-ই না লাখ টাকার এ প্রকল্প সম্পর্কে। একই অবস্থা নরসিংদীর মনোহরদীসহ জেলার ৬ উপজেলার ৩০৭টি ছোট-বড় প্রকল্পের।

আওয়ামী লীগ নেতা ও জেলা পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান মনিরের হস্তক্ষেপেই এসব প্রকল্পে হেরফের হয়েছে বলে ধারণা স্থানীয়দের। গণঅভ্যুত্থানের পর এখনো পলাতক মনির হোসাইন।

জেলা পরিষদ বলছে, এরই মধ্যে ৩০৭টির মধ্যে ১২২টি প্রকল্প বাদ করা হয়েছে। বাকি ১৮৫টি প্রকল্প রয়েছে কাজের অপেক্ষায়।

নরসিংদী জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী নূর ই ইলহাম বলেন, ‘এডিপির যেটা আমাদের সাড়ে তিন কোটি টাকার ১০৩টি প্রকল্প নেয়া ছিল। এর মধ্যে ১ কোটি ৪৭ লাখ টাকার ৪৬টি প্রকল্পের যৌক্তিকতা না থাকায় বাতিল করা হয়েছে। বাতিল করে নতুন প্রকল্পের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।’

প্রকল্পগুলোর মোট ব্যয় ধরা হয় ১১ কোটি ২৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাতিল হওয়া প্রকল্পগুলোর অর্থ পুনরায় চলতি অর্থবছরে কাজের উপযোগী করা হবে বলে দাবি জেলা পরিষদের।

এসএইচ