স্বাক্ষর জাল করে ‘ভুয়া নিয়োগ’, স্কুল প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ

টাঙ্গাইল কালিহাতী তোফাজ্জাল হোসেন তুহিন কারিগরি স্কুল
টাঙ্গাইল কালিহাতী তোফাজ্জাল হোসেন তুহিন কারিগরি স্কুল | ছবি: এখন
0

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে তোফাজ্জাল হোসেন তুহিন কারিগরি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জাল করে ৯ জনকে ভুয়া নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার, বোর্ড প্রতিনিধি ও ডিজি প্রতিনিধির স্বাক্ষর জাল করে এসব নিয়োগ দেয়া হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। এমনকি, প্রার্থীদের কাছ থেকে থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেয়ারও অভিযোগ। এসব অনিয়মের অভিযোগে সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানের গর্ভনিং বডির সাবেক সভাপতি আবু হানিফ মিয়া জেলা প্রশাসক বরারব লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

লিখিত অভিযোগে বর্ণনা করা হয়, ২০১৫ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির কোনো দাপ্তরিক কাজে গভর্নিং বডির সভাপতির কোনো স্বাক্ষর নেয়া হয়নি। সব কাজে সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছে। ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত হলে দ্রুততার সঙ্গে ব্যাকডেটেট তারিখে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করা হয়। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সভাপতিসহ উপজেলা শিক্ষা অফিসার, বোর্ড প্রতিনিধি ও ডিজি প্রতিনিধির স্বাক্ষরও জালিয়াতি করা হয়েছে। এসব নিয়োগে প্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা গ্রহণ করা হয়েছে। কোনো নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজিত হয়নি।

অভিযোগপত্রে তিনি আরো বর্ণনা করা হয়, এমন অবস্থায় ৯ জনকে ‘ভুয়া নিয়োগ’ দেখিয়ে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্ত; এ ছাড়া বেতন পাইয়ে দিতে ‘ভুয়া ফাইল’ পাঠানো হলে বোর্ড কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই করে ডিজি প্রতিনিধির স্বাক্ষর মিল না পেয়ে তা নোটিশ আকারে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে।

আরো অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানটিতে কোনো শিক্ষক না থাকায় শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করে লাইব্রেরিয়ান হাসিনা আক্তার, অফিস সহকারী আবু জায়েদ তালুকদার ও ল্যাব সহকারী জাহাঙ্গীর আলম। এ ছাড়াও ওই প্রতিষ্ঠানে নবম শ্রেণি ও এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র থাকায় তাদের দিয়েই এসএসসি বোর্ড পরীক্ষার কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করানো হয়। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীদের কোনো প্রকার হাজিরা খাতা ব্যবহার করা হয় না। শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন, বেতন, ফরম পূরণ ও সনদ বিতরণ বাবদ ফি নেয়া হলেও তার কোনো প্রকার রশিদ দেয়া হয় না। প্রতি বছর ২৪০ সেট বই বরাদ্দ আনা হলেও শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০-৭০ জন। বাকি বই প্রতি বছর কেজি দরে বিক্রি করা হয়। প্রতি বছর সমবায় অফিসে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার তালিকা পেশ করা হলেও তাদের এক টাকাও দেয়া হয় না।

অভিযোগের বিষয়ে তোফাজ্জাল হোসেন তুহিন কারিগরি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এসব ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগ।’

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তদন্তের জন্য দেয়া হয়েছে। তদন্তে করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় দ্রুতই তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

ইএ