রিপোর্টার্স ইউনিটির অফিসের উপরে রাঙামাটি জেলা পরিষদের বাজারফান্ড অফিসের তিনতলা ভবনের সংস্কার কাজে নিরাপত্তা বেষ্টনী দিতে বলায় লোহার রড দিয়ে এই হামলা চালান ঠিকাদার নান্টু ও তার নির্মাণ শ্রমিকরা। তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নান্টু।
হামলার পরপরই হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। তবে এ ঘটনায় কোতয়ালী থানায় অভিযোগ দেয়া হলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় রাঙামাটি প্রেসক্লাব ও রিপোর্টার্স ইউনিটি হামলার ঘটনা তীব্র নিন্দা জানিয়ে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এদিকে হামলার খবরে বিকেলে রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার আহত কামাল উদ্দিনকে হাসপাতালে দেখতে যান। এ ঘটনায় তিনি নিন্দা প্রকাশ করে হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। এসময় জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার মোহাম্মদ রিজাউল করিম, সদস্য মিনহাজ মুরশীদ ও হাবিব আজম উপস্থিত ছিলেন।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ের উপরে বাজারফান্ড ভবনের সংস্কার কাজ করছেন যুবলীগ নেতা মিলন নন্দী নান্টু। অরক্ষিত অবস্থায় দেয়াল ভেঙে সংস্কার কাজ করায় ইট, পাথর ও পলেস্তারা নিচে পড়ছিল। বেশ কয়েক বলা হলেও কানে নেয়নি ঠিকাদার।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ আবারও নিরাপত্তা বেষ্টনী দিতে বলায় হামলার শিকার হন কামাল উদ্দিন। এ সময় হামলাকারীরা নির্মাণ কাজের লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা কামালকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শওকত আকবর খান বলেন, ‘কামালের ডান চোখের উপর কেটে গেছে। এছাড়া শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি দেয়া হয়েছে। আপাতত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’
হামলার ঘটনায় যুবলীগ নেতা ঠিকাদার মিলন নন্দী নান্টুকে প্রধান আসামি করে হামলায় অংশ নেয়া আরও পাঁচ নির্মাণ শ্রমিককে আসামি করে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রাঙামাটি কোতয়ালী থানার ওসি শাহেদ উদ্দিন বলেন, ‘খবর পাওয়ার পর পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। অভিযুক্তদের ধরার চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় জড়িতদের ছাড় দেয়া হবে না।’
অভিযোগ আছে, সন্ত্রাসী প্রকৃতির যুবলীগ নেতা নান্টু দলীয় পরিচয়ে বেশ প্রভাবশালী। রাঙামাটি জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী এরশাদ মন্ডলের ডান হাত হিসেবে কাজ করেন। এরশাদ মন্ডল জেলা আওয়ামী ডিপ্লোমা পরিষদের সভাপতি ছিলেন। ফলে সরকার পরিবর্তন হলেও ঠিকাদারি কাজ পেতে কোনো সমস্যা হয়নি নান্টুর। এরশাদ মন্ডলের হাত ধরেই রাঙামাটি জেলা পরিষদের অধীনস্ত বাজার ফান্ড অফিস সংস্কারে ২২ লাখ টাকার কাজটি পান নান্টু।