করতোয়া বাঁচানোর প্রকল্পে কাজের মান ও গতি নিয়ে প্রশ্ন

বগুড়ার করতোয়া বাঁচাতে প্রকল্প, কাজের মান ও গতি নিয়ে প্রশ্ন স্থানীয়দের | এখন টিভি
0

বগুড়া শহরের জীবনরেখা করতোয়া নদী। প্রাচীন এই নদী দখল-দূষণ আর ভরাটে মৃতপ্রায়। অনেক স্থানে সরু, নাব্য সংকটসহ সৌন্দর্য বিলীনের পথে। সেই করতোয়াকে প্রাণ দিতে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। স্থানীয়দের অভিযোগ কাজের মান ও ধীরগতি নিয়ে।

বগুড়াবাসীর জীবন জড়ানো করতোয়া নদীতে। এই নদীর তীরেই গড়ে উঠেছিল প্রাচীন সভ্যতা পুন্ড্রবর্ধন। একসময় যাত্রী ও বাণিজ্য জাহাজের গন্তব্য ছিল এই নদী, ছিল মাঝিদের ভাটিয়ালি গানের সুর।

কিন্তু সময়ের ব্যবধানে দখল, দূষণ আর ভরাটে প্রাণ হারিয়েছে নদীটি। সেই প্রাণ ফেরাতেই কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) হাতে নিয়েছে চার হাজার ৭১৩ কোটি টাকার প্রকল্প।

স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, 'করতোয়া নদীকে প্রসারিত করার যে উদ্যোগটা নেয়া হয়েছে এটা যদি দ্রুত বাস্তবায়ন হয় আমরা মনে করছি বগুড়াবাসীসহ করতোয়ার দুইপাড়েরর যে জনপদ এটা আবারো তাদের সে প্রাণ ফিরে পাবে।'

২৮ কিলোমিটার নদী খননের কাজ আগামী জুনেই শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনও কাজ বাকি ৩০ শতাংশ। তবে বর্ষার শুরুতেই খননের মাটি নদীতেই মিশে যাচ্ছে- এতেও নাব্য সংকটের শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। আর তীর বাঁধানোর কাজে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের অভিযোগও তুলেছেন স্থানীয়রা।

সুজনের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন কবির তুহিন বলেন, 'কাজ দেখে আমরা একটু আশাবাদী হয়েছিলাম, কিন্তু পরে দেখলাম কাজগুলো যে মানে হচ্ছে সে মানে না হয়ে একটা স্থায়ী সিস্টেমে এটা হওয়া দরকার ছিল। যেভাবে খনন কাজ করা হচ্ছে, মাটি তুলে তা ওখানেই রাখা হচ্ছে। আমরা মনে করছি বর্ষাকালে আগের অবস্থায় ফিরে আসবে।'

বগুড়া পরিবেশ উন্নয়ন নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক বলেন, 'যে টাকাটা বরাদ্দ হয়েছে তার যেন যথাযথ ব্যবহার করা হয়, একটা স্বচ্ছতা যেন থাকে। আর করতোয়াকে কেন্দ্র করে আগে কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি অনেক ধরনের অনিয়ম হয়েছে, নদী দখল থেকে শুরু করে। সে জায়গা থেকে যদি আমরা বেরিয়ে একটা স্বচ্ছতা নিয়ে শোভাবর্ধন এবং এর নাব্যতার যে চেষ্টা সেটা যদি করা হয় সত্যিকার অর্থে বগুড়াবাসীর দীর্ঘদিনের যে দাবি, প্রত্যাশা, তা পূরণ হবে।'

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে প্রকল্প কর্মকর্তা বললেন, টাস্কফোর্সের মাধ্যমে কাজের তদারকি করায় কোনো অনিয়মের সুযোগ নেই।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, 'এসপি ব্রিজ থেকে ডিসি অফিস পর্যন্ত স্লোপ প্রটেকশন এবং ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। সেখানে আমাদের টাস্কফোর্স রয়েছে। তারা গুণগত মান এবং পরিমাণ পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সেখানে দিচ্ছে, তারপরই কিন্তু সেগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে। গুণগত মান এবং পরিমাণ শতভাগ সিউর হয়েই সেগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে।'

এই উন্নয়ন নদীর প্রাণ ফিরে আনার পাশাপাশি কৃষি এবং মৎস্য খাতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। করতোয়া নদীকে নতুন জীবন দিতে হলে প্রকল্পের কাজ সময়মতো ও গুণগতভাবে সম্পন্ন করতে হবে এমনটাই দাবি বগুড়াবাসীর।

এসএস