নরসিংদীতে ২ শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণ, সালিশে মীমাংসা চেষ্টা

নরসিংদীর রায়পুরা থানা | এখন টিভি
0

নরসিংদীর রায়পুরায় ষষ্ঠ শ্রেণির দুই ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে আজ (বুধবার, ৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নিশ্চিত করেন, রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ। এর আগে সোমবার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার চরাঞ্চলের একটি গ্রামে আট বন্ধু মিলে এই গণধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানা গেছে স্থানীয়ভাবে।

ধর্ষণের শিকার দুই ছাত্রী রায়পুরার একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, তারা দু'জনেই কিশোরী এবং তাদের পারিবারিক অবস্থা নড়বড়ে। অপরদিকে, অভিযুক্তরা এলাকায় তুলনামূলক প্রভাবশালী।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার বিকেলে কাইয়ুম (২১) ও মুন্না (২২) নামে দুই যুবকের সাথে নৌকা যোগে ঘুরতে যায় দুই কিশোরী। নৌকা দিয়ে ঘুরাঘুরি শেষে বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে এলে কাইয়ুম ও মুন্না কৌশলে নৌকা অন্য একটি তীরে ভিড়ায় এবং তাদেরকে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যায়।

পরে কাইয়ুম ও মুন্না তাদের আরও ছয় বন্ধুকে ডেকে এনে সকলে মিলে ভয়ভীতি দেখিয়ে দুই নাবালিকা ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে তারা নিজ বাড়ি ফিরে গেলে তাদের অবস্থা দেখে পরিবারের সদস্যরা ঘটনা জানতে চাইলে ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ পায়।

অভিযুক্ত কাইয়ুম চরআড়ালিয়া এলাকার সেন্টু মিয়ার ছেলে এবং মুন্না একই এলাকার শাহ মিয়ার ছেলে। তাদের বন্ধুরা হচ্ছে একই এলাকার রমজান মিয়া, সাইফুল মিয়া, রমজান আলী, আশিক মিয়া, ইমরান এবং অজ্ঞাত আরও একজন।

এ ব্যাপারে ধর্ষণের শিকার দুই কিশোরীর বাবার বক্তব্য এক। দিন মজুর দুই জনই বলছেন, 'ধর্ষণকারীরা প্রভাবশালী, আমরা তাদের সঙ্গে পারবো না। তাছাড়া মেয়েকে ভবিষ্যতে বিয়ে দেয়ার বিষয়টি চিন্তা করে এলাকার চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দিয়েছি। থানা পুলিশ করার মতো সামর্থ্য আমাদের নেই। চেয়ারম্যান বিষয়টি নিয়ে মীমাংসা করবেন বলে জানিয়েছেন।'

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই এলাকার একজন মুঠোফোনে বলেন, 'ধর্ষণে অভিযুক্ত আটজন থেকে পাঁচজনই ওই চেয়ারম্যানের বাড়ির বাসিন্দা। অর্থাৎ একই মহল্লা বা গোষ্ঠীর। নিজের বাড়ির অভিযুক্তদের বিচার কতটুকু করতে পারবেন এবং ধর্ষণের মতো বড়সড় অপরাধ গ্রাম আদালতে মীমাংসাযোগ্য কি না?'

এমন প্রশ্নের উত্তরের জন্য মাসুদা জামান নামে ওই ইউপি চেয়ারম্যানের মুঠোফোনে সন্ধ্যায় একাধিক বার কল করা হলেও তা রিসিভ হয়নি।

ঘটনার ব্যাপারে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ বলেন, 'ঘটনাটি শুনেছি । লিখিত অভিযোগের পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।'

এসএস