এর আগে শুক্রবার (৪ এপ্রিল) কলমাকান্দা উপজেলার পাঁচুড়া গ্রামের শেখ জামালের হাঁসের খামার থেকে মেছো বিড়ালটি আটকা পরে। মেছো বিড়ালটির উচ্চতা প্রায় দুই ফুট এবং লম্বায় তিন ফুট।
বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাচুড়া গ্রামের শেখ জামালের খামারে শেয়ালের উপদ্রব বাড়ায় একটি লোহার খাঁচার ফাঁদ তৈরি করেন। এই ফাঁদে রাতে একটি হাঁস রেখে ফাঁদের মুখ খুলে রাখতেন খামারির মালিক। শুক্রবার সকালে ফাঁদে কিছু একটা আটকা পড়েছে শব্দ শুনে দেখতে গেলে মেছো বিড়ালটি দেখতে পায় খামারে লোকজন। এর আগেও এই ফাঁদে আরো দুটি শেয়াল ফাঁদে ধরা পড়ে।
এদিকে মেছো বিড়াল ধরা পড়ার খবরে স্থানীয়রা সেটি দেখতে খামারে ভিড় করেন। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে। বিষয়টি নজরে আসলে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেভ দ্য এনিমেলস অফ সুসং এর সদস্যরা উদ্ধতন বন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেন।
পরে দুর্গাপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মজনু প্রাং, ফরেস্টার রহিম উদ্দিন, এফজি মিশু দে, মালী মো. তুহিন উদ্দিন, বাগান মালী মো. তাজুল ইসলাম প্রাণীটিকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বনে অবমুক্ত করেন।
এ ব্যাপারে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট বন্যপ্রাণী পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আস সাদিক জানান, আমরা স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেভ দ্য এনিমেলস অফ সুসংয়ের সদস্যদের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পেরে খামারির সাথে কথা বলেছি এবং প্রাণীটিকে ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি। পরবর্তীতে আমাদের বন বিভাগের সদস্যদের মাধ্যমে প্রাণীটিকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষ পুনরায় বনে প্রাণীটিকে অবমুক্ত করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, মেছো বিড়াল একটি বিরল প্রজাতির প্রাণী। এসব প্রাণী সাধারণত বড় জলাশয়, পুকুর ও হাওর অঞ্চলে বসবাস করে। এদের মূল খাবারই হল মাছ। তবে বিভিন্ন সময় খাদ্যের সন্ধানে এরা লোকালয়ে চলে আসে এবং হাঁস মুরগির খামারে ঢুকে পড়ে।
এরা সাধারণত ইঁদুর, বিষধর সাপসহ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক প্রাণী খেয়ে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখে। তবে এই প্রাণীর শরীরে কালো ছোপ ছোপ চিহ্ন থাকায় অনেক সময় মানুষ এটিকে চিতা বাঘ বা বাঘ বলে ভুল করে হত্যা করে। দেশের প্রথমবারের মতো এবছর থেকেই পহেলা ফেব্রুয়ারি বিশ্ব মেছো বিড়াল দিবসও পালিত হয়েছে।
প্রাণীটি একেবারেই নিরীহ প্রজাতির একটি প্রাণী। আমরা সচেতনতার মাধ্যমে সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি প্রাণীটির রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসার জন্য।