সাতক্ষীরায় জৈব সারের ব্যবহার বাড়িয়ে খরচ কমাচ্ছেন কৃষক

0

রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে ফসল উৎপাদনে খরচ কমানোর লক্ষ্যে জৈব সারের ব্যবহার বাড়াচ্ছেন সাতক্ষীরার কৃষকরা। বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন বাড়ছে এই সারের। এতে কৃষি উদ্যোক্তার পাশাপাশি বাড়ছে কর্মসংস্থানও। বর্তমানে জেলার প্রতি মাসে তিন থেকে ৪'শ টন জৈব সার উৎপাদন হচ্ছে। যার বাজারমূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা।

খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে কৃষি জমিতে অতিমাত্রায় ব্যবহার হচ্ছে রাসায়নিক সার। ফলন বাড়াতে উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক বেড়েছে এর ব্যবহার। এতে তাৎক্ষণিক ভালো ফলন হলেও ক্ষতি হচ্ছে জমির। কৃষকের আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি মারাত্মক হুমকিতে পড়ছে স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য। তবে জমিতে জৈব সার ব্যবহার করলে ফলন ভালো হওয়ার পাশাপাশি বৃদ্ধি পাচ্ছে জমির উর্বরতা। দিন দিন জৈব সারের ব্যবহার বাড়াচ্ছে সাতক্ষীরার কৃষকরা। বাড়তি চাহিদা তৈরি হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে জৈব সার উৎপাদন করছেন অনেক কৃষক ও উদ্যোক্তারা।

গ্রাম এলাকায় গড়ে উঠা জৈব সারের প্ল্যান্টে গৃহস্থালির আবর্জনা, কচুরিপানা, গোবর ও হাঁস-মুরগির বিষ্ঠার সঙ্গে আরও কয়েকটি উপকরণের মিশ্রণে তৈরি হচ্ছে ভার্মি কম্পোস্ট, ট্রাইকো কমপোস্টসহ বিভিন্ন জৈব সার। গ্রাম থেকেই জৈব সার তৈরির উপকরণ সংগ্রহ করা হয়। যা তৈরিতে সময় লাগে ২১ থেকে ৩৫ দিন পর্যন্ত। চাষিরা বলছেন, কৃষি জমিতে এই সার ব্যবহারে মাটির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়ছে ফসলের উৎপাদন। এতে খরচ কমার সঙ্গে রাসায়নিক সারের ওপর নির্ভরতা কমছে।

আগে কৃষক পর্যায়ে সীমিত পরিসরে জৈব সার তৈরি করা হলেও এটি এখন লাভজনক ব্যবসা। জেলার শতাধিক কৃষক ও কৃষি উদ্যোক্তা বাণিজ্যিকভাবে এই পেশায় যুক্ত হয়েছেন। যেখানে কর্মসংস্থান হয়েছে কয়েক হাজার মানুষের। স্থানীয় উদ্যোক্তারা বলছেন, কৃষি বিভাগের অনুমোদন ছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত জৈব সার বাজারজাত করতে পারেন না তারা। এজন্য সরকারি অনুমোদন প্রক্রিয়া সহজ করার দাবি তাদের।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, জৈব সারের বাণিজ্যিক উৎপাদন বাড়ানো গেলে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমবে। এজন্য কৃষকদের জৈব সার ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তারা।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘১৮ টি অপরিহার্য পুষ্টি উপাদানসহ আরো গাছের জন্য যে ৮-১০ টি সেটাও এই জৈব পদার্থ পাওয়া সম্ভব। এজন্য আমরা কৃষকদেরকে এই জৈব পদার্থ ব্যবহারে উৎসাহিত করছি।’

বর্তমানে জেলার ২৪৮ জন উদ্যোক্তা বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন প্রকার জৈব সার উৎপাদন করছে। যেখান থেকে গত অর্থবছরে উৎপাদন হয় ৪ হাজার ৫০০ টন সার।

এএম