শিশুদের বিভিন্ন ব্যথাজনিত সমস্যা নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন শ্যামলীর ঢাকা পেইন ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারের (ডিপিআরসি) বাত-ব্যথা, প্যারালাইসিস ও রিহ্যাব-ফিজিও বিশেষজ্ঞ ডা. মো. সফিউল্যাহ প্রধান।
তার পরামর্শ হুবহু তুলে ধরা হলো—
বাচ্চাদের মাংসপেশির ব্যথা এখন সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাচ্চারা স্কুল থেকে ফেরার পরে পা চাবানো বা ব্যথা করে এমন কথা বলে থাকে, যা এখন খুব কমন সমস্যা। যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে গ্রোথ পেইন বলা হয়। এই সমস্যা নিয়ে বাবা মার চিন্তার কোনো কারণ নেই। এতে বাসায় কুসুম গরম সেঁকের পাশাপাশি হালকা মেসেজ করা যেতে পারে। এছাড়া ব্যথা কমার জন্য সর্বোচ্চ প্যারাসিটামল খেলেই সমস্যা কেটে যেবে। এছাড়া বাচ্চাদের সুষম খাবারের পাশাপাশি ডিম, দুধ ও ভিটামিন ডি খাওয়াতে রাখতে হবে। যা গ্রোথ পেইনের সমস্যা দূর করবে।
এছাড়া শিশুদের চিপস, ফাস্টফুড,পাউরুটি বিভিন্ন মানের প্রসেস করা খাবার পরিহার করতে হবে। ঠিকমতো ঘুমাতে হবে, মোবাইল ফোন ব্যবহার কমাতে হবে ও নিয়মিত পরিমাণ মতো পানি পানের অভ্যাস বাসা থেকে গড়ে তুলতে হবে।
বিশেষ করে ১১ থেকে ১৪ বছরের বাচ্চাদের মধ্যে আরেকটা বড় সমস্যা দেখা যায় যা হচ্ছে পার্থস ডিজিজ। ইনফেকশন থেকে এই ধরনের ডিজিজ হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে বিভিন্ন ব্লাড টেস্ট করে চিকিৎসা নিতে হবে। এ রোগে বিভিন্ন চিকিৎসার পাশাপাশি থেরাপিরও প্রয়োজন হয়। এছাড়া বাচ্চাদের ভিটামিন ডি এর অভাবে রিকেটস নামের একটা রোগ হয়। তবে বর্তমানে এ রোগের প্রাদুর্ভাব অনেকটা কমেছে।
আরো একটি বাচ্চাদের রোগ আছে যার নাম জুভেনাইল ইডিওপ্যাথিক আর্থ্রাইটিস (জেআইএ)। যেকোনো বাচ্চার বাত ব্যথার মতো এ সমস্যা হতে পারে। এই রোগগুলো বংশগত কারণেও হতে পারে তবে এগুলো কমন সমস্যা। এছাড়া বাচ্চাদের করোনা, ডেঙ্গু, চিকুন গুনিয়ার মতো রোগ হবার পরেও নানা ব্যথা হতে দেখা যাইয়। এক্ষেত্রে নিয়মিত ব্যায়াম, থেরাপি, বিশ্রাম ও সুষম খাবার খেলে বাচ্চারা এ থেকে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে।
এদিকে কিছু বাচ্চার জন্মের পর খিঁচুনি জাতীয় সমস্যা দেখা যায় । এই সমস্যা থেকেও বাচ্চাদের গ্রোথ্র পেইন সমস্যা হয়। যেখানে হাত পা নাড়াতে কষ্ট হয় যেমন সেরিব্রাল পালসি। এছাড়া সেরিব্রাল পালসি জন্মগত ভাবেও হতে পারে। এছাড়া জন্মগত ভাবে ডাউন সিনড্রোম হতে পারে। আর ফিজিক্যাল ইনজুরি নিয়ে জন্ম নেয়া বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও এই সমস্যাগুলো দেখা যায়। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শে বিভিন্ন কারেক্টিভ থেরাপি বা এক্সারসাইজের মাধ্যমে কারেকশন করা যেতে পারে।
১২ থেকে ১৪ বছরের বাচ্চাদের যে সমস্যাটা বেশি দেখা যায় তা হলো কোমর ব্যথা। এর মূল কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার। বাসায় বসে বসে মোবাইল ফোন দেখা, সামনে ঝুঁকে ল্যাপটপ ব্যবহার করা, খেলাধুলার অভাব এবং পর্যাপ্ত পানি না খাওয়া মূলত এসব কারনেই ব্যথার রোগগুলো হয়ে থাকে। তাই আমাদের এক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে।