আজ সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে জাতীয় পতাকায় মোড়ানো একটি ফ্রিজিং ভ্যানে করে মরদেহ নিয়ে বাসভবনের উদ্দেশে যাত্রা শুরু হয়। হাসপাতাল থেকে বাসভবন পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়।
ভোর থেকেই প্রিয় নেত্রীকে শেষবার দেখার জন্য বাসভবনের সামনে জড়ো হতে থাকেন বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ। বাসভবনে পৌঁছানোর পর পরিবারের সদস্যরা তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন।
আজ বাদ জোহর দুপুর ২টার দিকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বিকেলে শেরেবাংলা নগরে স্বামী শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরের পাশেই তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া এভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে মরদেহ রাখা হবে। জানাজা অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া এভিনিউ জুড়ে। সাধারণ মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে জানাজায় অংশ নিতে পারেন, সেজন্য নিরাপত্তা বাহিনীসহ রাষ্ট্রীয় সকল দপ্তর প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
আরও পড়ুন:
জানাজা শেষে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বেগম খালেদা জিয়ার দাফন সম্পন্ন হবে। সেখানে পরিবারের সদস্য, সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিবর্গ, বিদেশি অতিথি, রাষ্ট্রদূত ও বিএনপি নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। দাফনকাজ নির্বিঘ্ন করতে জিয়া উদ্যান এলাকায় জনসাধারণের চলাচল সীমিত রাখা হয়েছে।
সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে আজ সারাদেশে একদিনের সাধারণ ছুটি ও তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হচ্ছে। দেশের সকল প্রতিষ্ঠান ও বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। এছাড়া বাদ জুমা সকল মসজিদে মরহুমার আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও অন্যান্য উপাসনালয়ে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।
বিএনপিও তাদের দলীয় প্রধানের মৃত্যুতে সাত দিনের শোক কর্মসূচি পালন করছে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারাদেশে দলীয় কার্যালয়গুলোতে কালো পতাকা উত্তোলন ও নেতা-কর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করেছেন। গুলশান কার্যালয় ও নয়াপল্টনে খোলা হয়েছে শোক বই।
গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৬টায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮০ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি ও ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। গত ২৩ নভেম্বর সংক্রমণ ও নিউমোনিয়া নিয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন।
১৯৪৫ সালে দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করা খালেদা জিয়া ১৯৬০ সালে তৎকালীন ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর সংকটকালে তিনি দলের হাল ধরেন এবং ১৯৮৪ সালে বিএনপির চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হন। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে তার আপসহীন নেতৃত্বের কারণে তিনি ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে খ্যাতি পান।





