স্থগিতের মূল কারণ (Reason for Postponement)
সরকার আগামী বুধবার থেকে শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর, ১ ও ২ জানুয়ারি) পর্যন্ত তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। যেহেতু ২ জানুয়ারি শোকের শেষ দিন, তাই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তা (Safety of Candidates) এবং সার্বিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ। এরই প্রেক্ষিতে পরীক্ষাটি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (Director General of DPE)।
স্থগিতের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা (Official Suspension Announcement)
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা ২৯ মিনিটে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (Director General - DG) আবু নূর মো. শামসুজ্জামান গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ঘোষিত তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোকের কারণে ২ জানুয়ারির পরীক্ষাটি আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
পরবর্তী পরীক্ষার তারিখ (Next Exam Date Update)
পরীক্ষার নতুন তারিখ নিয়ে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক কৌতূহল দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে মহাপরিচালক জানান:
সম্ভাব্য তারিখ (Tentative Date): পরীক্ষার নতুন সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে আগামী ৯ জানুয়ারি নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা চলছে।
চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত: মহাপরিচালক স্পষ্ট করেছেন যে, ৯ জানুয়ারি সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে আলোচনায় থাকলেও বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত নয়। পরীক্ষার নতুন এবং চূড়ান্ত তারিখ (Final Exam Date) দ্রুতই অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এবং এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
পদের তুলনায় প্রার্থীর সংখ্যা আকাশচুম্বী (Record Number of Candidates)
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবারের নিয়োগে পদের বিপরীতে প্রার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি।
- মোট শূন্য পদ: ১৪ হাজার ৩৮৫টি।
- মোট আবেদনকারী: ১০ লাখ ৮০ হাজার ৮০ জন (Total Applicants: 1,080,080)।
- প্রতি পদের লড়াই: গড়ে ৭৫ জন প্রার্থী একটি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
- বিভাগীয় পরিসংখ্যান: প্রথম ধাপে প্রতি পদের বিপরীতে ৭৩ জন এবং দ্বিতীয় ধাপে (ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ) প্রতি পদের বিপরীতে ৮০ জনেরও বেশি প্রার্থী লড়াই করছেন।
বিশাল এই কর্মযজ্ঞ ও বিপুল সংখ্যক প্রার্থীর যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতেই শোককালীন সময়ে পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্তকে যৌক্তিক মনে করছে শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন:
পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্দেশনা (Instructions for Candidates)
প্রবেশপত্র (Admit Card) সংক্রান্ত কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজন হবে কি না, তা নিয়ে পরবর্তীতে নির্দেশনা দেওয়া হবে। তবে সাধারণত স্থগিত হওয়া পরীক্ষার আগের প্রবেশপত্র দিয়েই নতুন তারিখের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া যায়। প্রার্থীদের নিয়মিত অধিদপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট দেখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
১. প্রবেশপত্র ও এনআইডি (Admit Card & NID)
পরীক্ষার্থীদের ২৭ ডিসেম্বর থেকে ডাউনলোড শুরু হওয়া প্রবেশপত্রের রঙিন প্রিন্ট (Color Print of Admit Card) এবং মূল জাতীয় পরিচয়পত্র (Original Smart NID Card) অবশ্যই সঙ্গে আনতে হবে। এনআইডি ছাড়া কাউকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না।
২. কেন্দ্রে প্রবেশের সময়সীমা (Reporting Time)
পরীক্ষার্থীদের সকাল ৯টার মধ্যে অবশ্যই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে কেন্দ্রের সব প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হবে। এরপর আর কোনো প্রার্থীকে কোনো অজুহাতেই ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
৩. কান উন্মুক্ত রাখার বিশেষ শর্ত (Ear Visibility Rule)
ডিজিটাল জালিয়াতি বা ব্লুটুথ ডিভাইস শনাক্ত করতে এবার বিশেষ নিয়ম করা হয়েছে। পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষার্থীদের উভয় কান উন্মুক্ত (Ears must be visible) রাখতে হবে। সন্দেহ হলে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা টর্চলাইট দিয়ে কান পরীক্ষা করবেন।
৪. যা যা বহন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ (Prohibited Items)
পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন, ক্যালকুলেটর, স্মার্ট ওয়াচ (Smart Watch), যেকোনো ধরণের ঘড়ি, পার্স, মেমোরি কার্ড বা কোনো প্রকার ইলেকট্রনিক ডিভাইস বহন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কারো কাছে এসব পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক বহিষ্কার ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন:
৫. ওএমআর (OMR) পূরণের সঠিক নিয়ম
উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট পূরণে অবশ্যই কালো কালির বলপয়েন্ট কলম (Black Ballpoint Pen) ব্যবহার করতে হবে। পেনসিল বা অন্য কোনো কালির কলম ব্যবহার করলে উত্তরপত্র সরাসরি বাতিল বলে গণ্য হবে।
৬. জালিয়াতি রোধে ১৪৪ ধারা (Section 144)
সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে প্রতিটি কেন্দ্র এবং এর আশপাশে ১৪৪ ধারা (Section 144) জারি থাকবে। কেন্দ্রে মোবাইল বা ডিভাইস শনাক্ত করতে মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করা হবে।
৭. অসাধু চক্র থেকে সাবধান (Beware of Fraudsters)
নিয়োগের নামে কোনো অসাধু চক্রের সঙ্গে অর্থ লেনদেন না করার জন্য প্রার্থীদের কঠোরভাবে সতর্ক করেছে অধিদপ্তর। মনে রাখবেন, মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতেই এই নিয়োগ সম্পন্ন হবে।
৮. নতুন তারিখ ও এসএমএস (SMS Alert)
পরীক্ষার চূড়ান্ত তারিখ ও সময় প্রার্থীদের মোবাইলে খুদে বার্তার (SMS) মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়া অধিদপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটেও নতুন রুটিন প্রকাশ করা হবে।
আরও পড়ুন:





