থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার প্রতি যুদ্ধবিরতিতে ফেরত যাওয়ার আহ্বান মালয়েশিয়ার

থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী
থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী | ছবি: রয়টার্স
0

সংঘাত বন্ধ করে যুদ্ধবিরতিতে ফেরত যেতে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মালয়েশিয়া। আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার প্রশ্নে দুই দেশকে আলোচনার টেবিলে ফেরার অনুরোধ জানিয়ে বার্তা দিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী। এদিকে সংকট সমাধানে গুরুত্ব দেয়ার বিষয়ে বার্তা দিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। এমন প্রেক্ষাপটে আগামী বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সীমান্ত রেখায় আলোচনায় বসতে যাচ্ছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনী। এদিকে ৮ ডিসেম্বর ফের শুরু হওয়া থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সংঘাতে এখন পর্যন্ত প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ জনে।

যুদ্ধবিরতি পুরোপুরি ভেস্তে যাওয়ার পর টানা ১৫ দিন ধরে সংঘাতে লিপ্ত থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া। হু…হু করে বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা।

উভয় দেশের সীমান্তেই দীর্ঘ হচ্ছে ঘর ছাড়া মানুষের সংখ্যা। এরমধ্যে ৫ লাখের বেশি বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে দাবি কম্বোডিয়ার। আর নিজ ভূখণ্ডে ৪ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার তথ্য দিয়েছে থাইল্যান্ড।

বিতর্কিত সীমান্ত সংঘাতে বসবাসরত থাই বাসিন্দাদের হামলার কবল থেকে রক্ষা করতে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবকরা।

তাদের মধ্যে একজন বলেন, ‘সব হারিয়ে ফেলেছি। কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। ফ্রিজ, টিভি, ফ্যান সব লুট হয়ে গেছে।’

স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘গ্রামের নিরাপত্তা দলের সদস্যদেরকে পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর চোখ ও কান হিসেবে কাজ করতে হবে। আমরা এখানে পাহারা দেওয়ার জন্য আছি। যদি কোনো অবিস্ফোরিত বোমা খুঁজে পাই বা কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে, আমাদের অবশ্যই খবর দিতে হবে।’

আরও পড়ুন:

এমন প্রেক্ষাপটে দুই দেশের মধ্যে শান্তি ফেরাতে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে জড়ো হয়েছেন আসিয়ান জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। বৈঠকের শুরুতে উদ্বোধনী ভাষণে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়াকে সংঘাত বন্ধ করে যুদ্ধবিরতি ফেরত যেতে আহ্বান জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

আর সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ দেয়া পোস্টে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম মন্তব্য করেছেন, আঞ্চলিক শান্তি রক্ষার প্রশ্নে আলোচনার বিকল্প নেই। সংঘাত নিরসনে দুই দেশকে আলোচনার টেবিলে ফিরে যাওয়ার আহ্বান তার।

চলমান এ সংঘাতে মধ্যস্থতাকারী যুক্তরাষ্ট্রও বলছে একই কথা। সংকট সমাধানে দুই দেশকে আরও সচেষ্ট হতে বার্তা দিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।

এমন প্রেক্ষাপটে আগামী বুধবার চনথাবুরি সীমান্তে দুই দেশের সামরিক নেতাদের মধ্যে একটি বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে থাই সেনাবাহিনী। থাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী অবশ্য বলছেন, যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্র বা চীন কেউই মুখ্য নয়। সমস্যার সমাধান কর‌তে এগিয়ে আসতে হবে দুই দেশকে।

তবে যুক্তরাষ্ট্র ও মালয়েশিয়ার আহ্বানের পরেও দ্বিতীয় দফায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর না হওয়ায় সম্ভাব্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ভেঙে পড়ার হুমকি রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে থাই সেনাবাহিনী বৈঠকের আহ্বান জানানোয় কিছুটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে বলে মনে করেন তারা।

এসএস