পান্না ত্রিভুজ নামে একটি বিতর্কিত অঞ্চলের দাবিকে কেন্দ্র করে ১১৮ বছরের পুরোনো দ্বন্দ্বে লিপ্ত থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া। যা নিয়ে মাঝে-মধ্যেই দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয় দুই দেশের সৈন্যরা। ইস্যুটির সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়াসহ আন্তর্জাতিক পক্ষগুলো বেশ কয়েকবার ব্যাংকক ও নমপেনকে আলোচনার টেবিলে বসালেও আসেনি কোনো স্থায়ী সমাধান।
এ বছরের জুলাইয়ে রক্তক্ষয়ী সীমান্ত সংঘাতে জড়ায় থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সৈন্যরা। কয়েকদিনের সংঘাতের পর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় প্রাথমিক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় দুই দেশ। যার স্থায়ী ভিত্তি পায় অক্টোবরে কুয়ালালামপুরে ট্রাম্পের উপস্থিতিতে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানের যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে।
কিন্তু এর দেড় মাস না পেরোতেই ডিসেম্বর থেকে নতুন করে সংঘাতে জড়ায় ব্যাংকক ও নমপেন। চলমান সংঘাতে প্রাণহানি ছাড়াও বাস্তুচ্যুত হয়েছে দুই দেশের সীমান্ত এলাকার কয়েক লাখ বাসিন্দা। যার রেশ পড়েছে সীমান্তবর্তী অঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও। শুক্রবার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে থাইল্যান্ডের অন্তত ৭ টি প্রদেশের প্রায় এক হাজার স্কুল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার। দ্রুত চলমান সংঘাতের সমাধান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরতে নিজেদের ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন এসব এলাকার শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন:
শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, ‘১৩ দিন ধরে আশ্রয়কেন্দ্রে আছি। গুলির শব্দ শুনে জীবন বাঁচাতে আশ্রয়কেন্দ্রে আসি। অনেক দিন হয়ে গেছে, দ্রুত স্কুলে ফিরতে ও সহপাঠীদের সঙ্গে দেখা করতে চাই।’
শিক্ষার্থীদের আরেকজন বলেন, ‘সংঘাত শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্কুল খুলবে না। আমি আমার সহপাঠীদের মিস করছি।’
একই অবস্থা বিরাজ করছে কম্বোডিয়াজুড়েও। চলমান সংঘাতের কারণে নিরাপত্তা শঙ্কায় দেশটির সীমান্তবর্তী প্রদেশগুলোর ৫০০ বেশি স্কুল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। অনেক স্থানে বাস্তুচ্যুত শিক্ষার্থীদের নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা রেখেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। পাশাপাশি ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অস্থায়ী ভিত্তিতে চলছে পাঠদানও।
এরইমধ্যে কম্বোডিয়ার সিয়েম রিপ প্রদেশের একটি স্কুল ১৩ বাস্তুচ্যুত শিক্ষার্থীর দায়িত্ব নিয়েছে এবং সংকটময় মুহূর্তেও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে উদ্যোগ নিয়েছে। আশেপাশের শরণার্থী শিবিরগুলো থেকেও শিক্ষার্থী সংগ্রহ শুরু করছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। এরপরও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় শিক্ষার্থীরা।
তবে থাই-কম্বোডিয়া চলমান সংঘাত নিরসনে আশার কথা শুনিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে রুবিও জানান, সোমবারের মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে ব্যাংকক ও নমপেন।





