সন্ধ্যার পর পরই এ আগুন বড় আকার ধারণ করে চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। মাথাগোঁজার ঠাঁই হারিয়ে নিঃস্ব সেখানকার মানুষগুলো। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে চারপাশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট। রাত ৯টার দিকে ব্রিফিংয়ে ফায়ার সার্ভিস জানায়, এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে।
তবে পানির অভাব এবং যানজটের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেশি সময় লেগে গেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
আজ (মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর) বিকেল ৫টার পর এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। আগুন নিয়ন্ত্রণে শুরুতে যোগ দেয় ৭টি ইউনিট। এরপর আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকলে একে একে বেড়ে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট দাঁড়ায় ২০টিতে। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে রাত সাড়ে ১০টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম দোলন বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। তবে বস্তির ঘিঞ্জি এলাকা এবং ঘটনাস্থলে তীব্র পানি সংকটের কারণে আগুন নেভাতে কর্মীদের ব্যাপক বেগ পেতে হয়।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করায় বস্তির শতাধিক ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুন ছড়িয়ে পড়ায় সরু সড়ক ও আশপাশে মানুষের ব্যাপক ভিড় সৃষ্টি হয়। এতে ঠিকঠাক কাজ করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায় ফায়ার সার্ভিসের। ঘটনাস্থলের আশপাশে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
আরও পড়ুন:
রাত সাড়ে ৯টার দিকে ব্রিফিংয়ে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘প্রথমে ১৬টি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করছিল। পরে পরিস্থিতি বিবেচনায় ইউনিট বাড়িয়ে প্রায় ২০টি করা হয়েছে। আগুনের শিখার তীব্রতা কমেছে এবং বেশ কয়েকটি অংশে আগুন সীমিত করা সম্ভব হয়েছে।’
জানা গেছে, আগুনের আক্রান্তস্থল কড়াইল বস্তির মাঝামাঝি হওয়ায় এটি নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের প্রত্যেকটি টিমকে যানজট ঠেলে পৌঁছাতে বেশ সময় লেগে গেছে। এতে আগুন দ্রুত আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দাউ দাউ করে আগুন খুব দ্রুত টিনের ঘরগুলোয় ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কিত হয়ে লোকজন যতটুকু সম্ভব নিজের আশ্রয়স্থল থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে সরে নেন।
বস্তিবাসীর আহাজারিতে চারপাশ ভারী হয়ে উঠেছে। স্বল্প আয়ের মানুষগুলোর শেষ সম্বল থাকার জায়গাটুকু পুড়ে শেষ হওয়ায় তারা কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। তবে এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।





