তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডের একযুগেও নিশ্চিত হয়নি ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা আর পুনর্বাসন

পুড়ে যাওয়া ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন একজন শ্রমিক | ছবি: এখন টিভি
1

আশুলিয়ার তাজরীন ফ্যাশনসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ১৩ বছর। সেদিনের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারান ১১৭ শ্রমিক। দীর্ঘ একযুগেও ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা আর পুনর্বাসন নিশ্চিত হয়নি ক্ষতিগ্রস্তদের। যাতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বেশিরভাগ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। এমনকি শাস্তিও নিশ্চিত হয়নি অবেহলাজনিত অভিযুক্তদের।

তাজরীন ট্রাজেডি ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে যেখানে আগুনে পুড়ে প্রাণ হারান শতাধিক শ্রমিক আর দগ্ধ হন অনেকেই। যা দেশের তৈরি পোশাক খাতের অগ্নি দুর্ঘটনার সবচেয়ে ভয়াল স্মৃতির নাম।

আগুন থেকে ভাগ্যক্রমে যারা প্রাণে বেঁচে ফিরেছেন তাদের অনেকেই এখনও ভুলতে পারেননি সেই ভয়াল স্মৃতি। ফিরতে পারেননি স্বাভাবিক জীবনে।

আগুন থেকে বেঁচে ফেরা কয়েকজন জানান, ১৩ বছরে অনেক কষ্টে দিন যাপন করলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি তাদের জন্য। এদের অনেকে হারিয়েছেন স্বামী, সন্তান। সব হারিয়ে একা কষ্টের দিন পার করলেও কোনো খোঁজ কেউ নেয়নি বলেও জানান তারা।

গত ১৩ বছরে পাল্টে গেছে অনেককিছুই। সুচিকিৎসার আশায় থাকা অনেকেই আজ বেঁচে নেই। আর ক্ষতিপূরণের আশায় ধুকতে থাকা অনেকেই আশাহত হয়ে ফিরে গেছেন গ্রামে। যারাও স্মৃতি আঁকড়ে পড়ে আছেন তাদের চাওয়া এক জীবন সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ।

আরও পড়ুন:

বিশ্বকে নাড়া দেয়া ওই ভয়াল ঘটনায় অনেকেই পর্যাপ্ত চিকিৎসার অভাব এবং দীর্ঘ সময় কর্মহীনতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন মানসিকভাবে। তাদের ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি জড়িতদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটারস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, ‘আমরা ১৩ বছর ধরেই সরকারের কাছে এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করে আসছি। কিন্তু বিগত সরকার সেটা না করে এ অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত যে মালিক তাকে পুরস্কৃত করা হলো। দলীয় পদ দেয়া হলো। ফলে আমরা বিচার তো পাই নি এবং ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা আর পুনর্বাসন পাই নি। এ সরকারের কাছে আমাদের দাবি থাকবে তারা যেন যাওয়ার আগে তাজরীন শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা আর পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দিয়ে যায়।’

তাজরীন গার্মেন্টসে অগ্নিকাণ্ডের সময় মূল ফটক তালাবদ্ধ থাকায় সেদিন জীবন বাঁচাতে উঁচু ভবন থেকে নিচে নেমে আসা শ্রমিকরা পতিত হয়েছিলো মৃত্যুকূপে। ওই ঘটনায় মরদেহ শনাক্ত হওয়ায় ৫৮ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয় স্বজনদের কাছে। অবশিষ্টদের অজ্ঞাতনামা হিসেবেই চিরদিনের জন্যে ঠাই হয়ে রাজধানীর জুরাইন কবরস্থানে।

ইএ