ইসরাইল-হামাস দ্বন্দ্বে মধ্যস্থতার পর এবার ইউক্রেন রাশিয়া সংঘাত থামাতে কোমর বেঁধে নেমেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরইমধ্যে ২৮ দফার যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সইও করেছেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা বন্ধ করতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মেনে নিতে হবে বলে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে হুঁশিয়ার করেছেন।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) ওভাল অফিসে নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানির সঙ্গে বৈঠকের পর জেলেনস্কির উদ্দেশে একথা বলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘আসন্ন শীতকালে ইউক্রেনের জ্বালানি কেন্দ্রের ওপর হামলা বন্ধ করতে দ্রুতই শান্তি প্রস্তাব মেনে নিতে হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের একটা পরিকল্পনা আছে। এটা এমন একটা যুদ্ধ, যা কখনোই হওয়া উচিত ছিলো না। আমি দেশটির প্রেসিডেন্ট হলে এটা কখনোই ঘটতে দিতাম না। এটা লজ্জার। আমি মনে করি তাদের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব আরও আগেই মেনে নেয়া উচিত ছিল। শান্তি অর্জনের একটিই উপায় আছে। তাকে এটা মানতে হবে।’
ট্রাম্প সমর্থিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব পাওয়ার কথা জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই প্রস্তাব ইউক্রেনে শান্তি স্থাপনের ভিত্তি হতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন পুতিন। শান্তি প্রস্তাব ব্যহত হলে রুশ সেনারা ইউক্রেনের ভেতরে প্রবেশ অব্যাহত রাখবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘আমরা প্রস্তাবটি পেয়েছি। এটিকে চূড়ান্ত শান্তিপূর্ণ সমাধানের ভিত্তি হতে পারে। কিয়েভ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাবগুলো নিয়ে আলোচনা করতে না চাইলে তাদের এবং ইউরোপীয় যুদ্ধবাজদের বুঝতে হবে ফ্রন্টলাইনের অন্যান্য এলাকাতেও কুপিয়ানস্কে ঘটে যাওয়া ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে।’
চলমান সংঘাতের অবসান ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে দ্রুত এবং গঠনমূলক কাজ করার জন্য প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে কোনোভাবেই নিজের দেশের জাতীয় স্বার্থের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবেন না বলেও জানান তিনি। জাতির উদ্দেশে এক ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনে এখন ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছে। এসময় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বানও জানান তিনি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘এটি আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন মুহূর্তগুলির মধ্যে একটি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব অনুযায়ী হয় সার্বভৌমত্ব হারাতে হবে অথবা একজন গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হারানোর ঝুঁকি নিতে হবে। আমি আলোচনায় বসবো এবং বিকল্প প্রস্তাব দেব। শান্তি স্থাপনের জন্য আমাদের আগের চেয়েও বেশি ঐক্যের প্রয়োজন। আমি আগেও ইউক্রেনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করিনি, সামনেও করবো না।’
বিশ্লেষকদের মতে, শান্তি পরিকল্পনার মাধ্যমে রাশিয়া যা চায়, যুক্তরাষ্ট্র তাই দিতে প্রস্তুত। শান্তি প্রস্তাবের জেরে মস্কো এমন কিছু অংশ দখল করতে পারবে যা হবে তাদের জন্য একটি বড় অর্জন।
এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় আয়োজিত জি-২০ সম্মেলনে জড়ো হয়েছে ইউক্রেনের মিত্ররা। সেখানে ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আরও বিশদ আলোচনার কথা জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। মিত্র জেলেনস্কির সাথে ফোনেও কথা বলেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।





