অন্যদিকে, বৈশ্বিক রাজনৈতিক টানাপোড়েন, অর্থনৈতিক ধীরগতি ও শক্তিধর দেশের চাপের কারণে প্রত্যাশা আগের চেয়ে অনেক কম। প্রশ্ন উঠছে—কপ৩০ কি আন্তর্জাতিক জলবায়ু কূটনীতিতে আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারবে, নাকি আবারও প্রতিশ্রুতির ফানুস চুপসে যাবে।
তবে উড়োজাহাজ ও হোটেলের খরচ অনেক বেড়ে যাওয়ায় উন্নয়নশীল ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর প্রতিনিধি সংখ্যা কমছে। ফলে জলবায়ু সুবিচারের আলোচনায় তাদের কণ্ঠস্বর অনেকটাই ক্ষীণ হয়ে পড়বে।
বাংলাদেশও এবার প্রতিনিধি সংখ্যা সীমিত করেছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং সচিব ফারহিনা আহমেদ কপ৩০-এ যাচ্ছেন না। মন্ত্রণালয়ের ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দল কপে অংশ নেবে।
এবার প্রথমবারের মতো কপে যোগ দিচ্ছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। উপদেষ্টা ফরিদা আখতারসহ দুজন প্রতিনিধি বাংলাদেশের প্যাভিলিয়নে ইলিশ, ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলসহ প্রাণিজ সম্পদের তথ্য ও ছবি প্রদর্শন করবেন। জলবায়ু সমস্যা কীভাবে দেশের মৎস্য ও প্রাণিজ সম্পদে প্রভাব ফেলছে, তা তুলে ধরা হবে।
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশও একই সমস্যার মুখোমুখি। নেপাল ও পাকিস্তানও উচ্চ খরচের কারণে কম প্রতিনিধি পাঠাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, খরচ বেশি এবং অংশগ্রহণ সীমিত থাকায় কপ৩০ একতরফা হয়ে যেতে পারে। দরিদ্র দেশগুলো যেখানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের কণ্ঠস্বর ন্যায়বিচারের আলোচনায় কম শোনা যাবে।
জাতিসংঘের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, কপ৩০-এ নিবন্ধিত প্রতিনিধি মাত্র ১২ হাজার ২শ। তুলনায় কপ২৯-এ ছিল ৫৪,০০০ এবং কপ২৮-এ ৮৪,০০০।
বাংলাদেশ কপ৩০-এর জন্য পাঁচটি অগ্রাধিকার ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ২০৩৫ সালের মধ্যে বছরে ৩০০ বিলিয়ন ডলারের নতুন বৈশ্বিক জলবায়ু অর্থায়ন, দীর্ঘ প্রতিশ্রুত ১০০ বিলিয়ন ডলারের অর্থ দ্রুত প্রদান, ২০২৬ সালের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির তহবিল কার্যকর করা, ২০২৫ সালের মধ্যে অভিযোজন অর্থায়ন দ্বিগুণ করা এবং ন্যায্য রূপান্তর ও আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার করা।





