বিশ্বের প্রথম ট্রিলিয়নিয়ার হওয়ার পথে ইলন মাস্ক

ইলন মাস্ক
ইলন মাস্ক | ছবি: সংগৃহীত
0

বিশ্বের প্রথম ট্রিলিয়নিয়ার হওয়ার পথে মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক। টেসলার শেয়ারহোল্ডারদের গণভোটে পাস হয়েছে ১০ বছরে মাস্কের ১ লাখ কোটি ডলার বেতন-ভাতার প্রস্তাব। তবে এ সুবিধা পেতে হলে তার নেতৃত্বে টেসলার মূলধন দেড় লাখ কোটি থেকে সাড়ে ৮ লাখ ডলার কোটি বৃদ্ধি এবং কোম্পানির মুনাফা ৪ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছাতে হবে। যদিও মাস্কের এ বেতন কাঠামো নিয়ে বিভিন্ন মহলে উঠেছে সমালোচনা ঝড়।

বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার কাছে ইলন মাস্কের নেতৃত্বের মূল্য এক লাখ কোটি ডলার। সংখ্যাটা অবিশ্বাস্য মনে হলেও, বছরে এই পরিমাণ অর্থ বেতন-ভাতা হিসেবে কোম্পানি প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। কর্পোরেট জগতে এই পদে এত টাকা বেতন পাওয়ার নজির নেই।

তার বেতন-ভাতা ২০২৪ সালে সিঙ্গাপুর, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, নরওয়ে নিউজিল্যান্ডসহ বিশ্বের ১৭০টি দেশের জিডিপির চেয়েও বেশি। চলতি বছরই বিশ্বে প্রথমবারের মতো ৫০ হাজার কোটি ডলারের সম্পদের মাইলফলক স্পর্শ করেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ এই ধনকুবের। বর্তমানে টেসলার ১৫ শতাংশ শেয়ার মাস্কের দখলে রয়েছে।

সম্প্রতি শেয়ার না বাড়ালে টেসলা ছেড়ে দেয়ার ইঙ্গিত দেয়ার পরই মাস্ককে ধরে রাখতে মরিয়া হয়ে ওঠে প্রতিষ্ঠানটি। বিনিময়ে প্রস্তাব করা হয় ১ ট্রিলিয়ন ডলারের লোভনীয় বেতনের প্যাকেজ। যা নিয়ে গণভোটের আয়োজন করেন টেসলার শেয়ারহোল্ডাররা।

অবশেষে ৭৫ শতাংশ শেয়ারহোল্ডার তার পক্ষে ভোট দেন। তবে বেতন হিসেবে নয় বরং কোম্পানির নেতৃত্ব, নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার জন্য এই অর্থ পাবেন মাস্ক।

প্রস্তাবটি পাসের পর সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মাস্ক বলেন, টেসলা পঞ্চম প্রজন্মের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চিপ ব্যবহার করবে। এছাড়া বিশাল চিপ কারখানা গড়ে তোলার ঘোষণা দেন তিনি।

টেসলার সিইও ইলন মাস্ক বলেন, ‘আমাদের হাতে এখন একমাত্র বিকল্প হলো চিপ তৈরিতে বড় পদক্ষেপ নেয়া। তারপরে মেমরি ও প্যাকেজিংয়ের বিষয়টি সমাধান করতে হবে।তা না হলে চিপ উৎপাদনের হার যত বেশিই হোক না কেন তা কাজে আসবে না। প্রতি মাসে প্রায় ১ লাখ চিপ তৈরির পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।’

আরও পড়ুন:

অনুমোদিত এ বেতন প্যাকেজটি শেয়ার আকারে দেয়া হবে। আগামী ১০ বছরে মাস্ক টেসলার জন্য অতিরিক্ত ৪২ কোটি ৩৭ লাখ শেয়ার পাওয়ার সুযোগ পাবেন, যার মূল্য দাঁড়াবে প্রায় ১ লাখ কোটি ডলার।

তবে এই সুবিধা পেতে ইলন মাস্ককে পূরণ করতে হবে কিছু শর্ত। কোম্পানির মূলধন দেড় ট্রিলিয়ন থেকে সাড়ে ৮ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে হবে।

আগামী ১০ বছরে এ প্যাকেজের আওতায় সব শেয়ার পেলে মাস্কের দৈনিক গড় আয় দাঁড়াবে প্রায় সাড়ে ২৭ কোটি ডলার। আর টেসলায় তার শেয়ার ২৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। টেসলা ছাড়াও স্পেসএক্স ও এক্সএআই কোম্পানির মালিকও তিনি।

তবে মাস্কের এ বেতন কাঠামোর বিরোধিতা করেছে দুটি বড় বিনিয়োগ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান গ্লাস লুইস ও আইএসএস। তাদের মতে এ বেতন প্যাকেজ বাড়াবাড়ি। এতে শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মত তাদের।

মাস্কের বেতন নিয়ে বিতর্ক এই প্রথম নয়। এর আগে টেসলার বাজারমূল্য ১০ গুণ বাড়লে মাস্ককে ১০ কোটি ডলার দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। ২০২৪ সালে সেই লক্ষ্য অর্জনের পর চুক্তিটি অবৈধ বলে রায় দেয় যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত।

চলতি বছর কঠিন সময় পার করছে টেসলা। বছরের প্রথমার্ধে বিক্রি ও লাভ কমে গেছে। বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রতি মার্কিন সরকারের উদাসীনতা বিলিয়ন ডলারের রাজস্ব হারানোরও ঝুঁকিতে রয়েছে টেসলা। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, শুধু বৈদ্যুতিক গাড়ি নয়, রোবোট্যাক্সি নেটওয়ার্ক ও মানবসদৃশ রোবট বিক্রির দিকেও ঝুঁকছে টেসলা।

এসএইচ