৩০তম কপ সম্মেলনের আগে বিশ্বনেতাদের সমালোচনায় পরিবেশকর্মীরা

৩০তম জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন
৩০তম জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন | ছবি: সংগৃহীত
0

ব্রাজিলে ১০ নভেম্বর ৩০তম কপ সম্মেলন শুরুর আগে বিশ্বনেতাদের সমালোচনায় মুখর পরিবেশকর্মীরা। পরিবেশ দূষণে সবচেয়ে বেশি দায়ী ধনী দেশগুলোর নেতাদের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে অভিনব পন্থায় জানাচ্ছেন প্রতিবাদও। এরইমধ্যে জাতিসংঘের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, উষ্ণায়নকে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করা থেকে বিরত রাখার পদক্ষেপে অগ্রগতি না থাকায় ২ দশমিক ৩ থেকে ২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের চরম উষ্ণায়নের পথে এগুচ্ছে বিশ্ব।

জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলার প্রশ্নে; বিশ্ব মোড়লদের নিষ্ক্রিয়তার প্রতিচ্ছবি তুলে ধরে এভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছেন একদল পরিবেশ কর্মী। ক্ষোভ ঝাড়ার অভিনব এই পন্থায় লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্টকে।

ব্রাজিলের বেলেম শহরে ১০ নভেম্বর শুরু হতে যাওয়া জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ-থার্টি সামনে রেখে এই প্রতিবাদ তাদের। যেখানে পরিবেশ দূষণে দায়ী ধনী দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করার জোর আহ্বান জলবায়ু কর্মীরা।

অক্সফামের নির্বাহী পরিচালক ভিভিয়ানা সান্তিয়াগো বলেন, ‘আমরা মনে করি-বিশ্ব যখন আগুনে জ্বলছে, তখন বিশ্বের নেতারা সত্যিই ঘুমাচ্ছেন। তাই পরিবর্তনের সময় এসেছে, দয়া করে সবাই জেগে উঠুন। দয়া করে বিশ্বের জন্য কিছু করুন। যারা বিশ্বকে দূষিত করেও ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে না তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার সময় এসেছে।’

১০ থেকে ২১ নভেম্বর আমাজনের বুকে কপ-থার্টি সম্মেলন ঘিরে বিশ্ব নেতাদের প্রস্তুতির শেষ সময়ে এসে এক ভয়াবহ সতর্কবার্তাও দিয়েছে জাতিসংঘ। তিন দশক ধরে বিশ্বব্যাপী আলোচনার পরেও, উষ্ণায়নকে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করা থেকে বিরত রাখা যাচ্ছে না বলে সম্প্রতি হুঁশিয়ার করেছে সংস্থাটি।

আরও পড়ুন:

অথচ এক দশক আগে হওয়া প্যারিস চুক্তির মূল লক্ষ্য ছিল এটি। যার কারণে বিশ্ব এখন ২.৩ থেকে ২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের চরম উষ্ণায়নের পথে রয়েছে বলে তথ্য তুলে ধরেছে জাতিসংঘ। এর জন্য কার্যত কোনো পদক্ষেপ না নেয়াকে দূষছেন অনেকে।

পানামার পরিবেশমন্ত্রী জুয়ান কার্লোস মন্টেরে বলেন, ‘আমরা কাগজপত্র আর প্রতিবেদনে ডুবে আছি। এমন আদেশে ডুবে আছি যা কেবলমাত্র একটি নথির কয়টি পৃষ্ঠা আছে এবং আমরা কত জীবন বাঁচাচ্ছি তার উপর ভিত্তি করে মূল্যায়ন করা হয়। তাই, সবার আগে আমাদের সিস্টেমের সংস্কার প্রয়োজন।’

এমন পরিস্থিতিতে কপ-থার্টি সম্মেলন শুরুর আগে নিজেদের মধ্যে জরুরি বৈঠক করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ু মন্ত্রীরা। যেখানে ১৯৯০ সালের তুলনায় ২০৪০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ৯০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্যে সম্মত হয় ইইউয়ের দেশগুলো।

ডেনমার্কের জলবায়ু মন্ত্রী লার্স আগার্ড বলেন, ‘বর্তমান সময়ে ইউরোপীয়দের জীবনযাত্রার ভবিষ্যৎ মান নিশ্চিত করা জরুরি। যা অর্থনীতির প্রতিযোগিতায়ও টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করবে। এটি এমন একটি মহাদেশ, যা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইসহ অনেক দিক দিয়ে বিশ্বে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।’

১০ নভেম্বর জলবায়ু সম্মেলন শুরুর আগে আমাজন অঞ্চলের বেলেমে বৃহস্পতিবার শুরু রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা নির্ধারণের বৈঠক হবে শুক্রবারও। আমাজন বুকে আয়োজিত ৩০তম কপ সম্মেলনকে বলা হচ্ছে কপ অব ট্রুথ বা সত্যের সম্মেলন। যেখানে বিশ্বের প্রায় ২০০ দেশের প্রতিনিধি, বিশেষজ্ঞ, বিজ্ঞানী ও পরিবেশকর্মীরা অংশ নিচ্ছেন।

সেজু