স্বর্ণের খনিই কি কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে সুদানের লাখো মানুষের জন্য?

সুদান ছেড়ে চলে যাচ্ছেন এখানকার বাসিন্দারা
সুদান ছেড়ে চলে যাচ্ছেন এখানকার বাসিন্দারা | ছবি: সংগৃহীত
0

স্বর্ণের খনিই কি কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে সুদানের লাখ লাখ মানুষের জন্য? দেশটির আধা-সামরিক বাহিনীর কাছে থাকা বিপুল পরিমাণ স্বর্ণের খনির জন্য আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের শিকার সুদানের লাখো মানুষ। আর এক্ষেত্রে অভিযোগের তীর সংযুক্ত আরব আমিরাতের দিকেই।

গাজা ও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যখন বিশ্বব্যাপী মাতামাতি, তখন সবার চোখের আড়ালে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চলছে উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার দেশ সুদানে।

গত তিন বছর ধরে দেশটির সেনাবাহিনী, সুদানিজ আর্মড ফোর্স (এসএএফ) ও আধাসামরিক বাহিনী-র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ) ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে রণক্ষেত্র রাজধানী খার্তুম, দারফুরসহ কয়েকটি অঞ্চল। যার বলি হয়ে প্রাণ গেছে প্রায় দেড় লাখ নিরীহ মানুষের। বাস্তুচ্যুত হয়েছে লাখ লাখ বাসিন্দা।

ক্ষমতার দিক থেকে অসম এই দুই বাহিনীর লড়াইয়ের পেছনে কে বা কারা ইন্ধন জোগাচ্ছে তা এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, দেশটির সেনাবাহিনী সুদানের স্বাধীনতা ও ঐক্য ধরে রাখতেই আধা-সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যাচ্ছে। অপরদিকে, বিদেশি ষড়যন্ত্রের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভিন্ন ভিন্ন লক্ষে সেনাবাহিনীকে প্রতিহত করতে চাইছে আধা-সামরিক বাহিনী।

এরইমধ্যে আরএসফের নেতারা সুদানের বেশিরভাগ সোনার খনির দখল নিয়েছে। এছাড়াও, সুদানের আকর্ষণীয় সব বাণিজ্যিক পণ্যও তাদের অধীনে। ২০২৪ সালের হিসেব অনুযায়ী, আরএসএফের কাছে ১০ টন সোনার মজুত রয়েছে। সুদানের সঙ্গো শহরে যেখানে গোল্ড গোল্ড রিফাইন করা হয় তাও রয়েছে বিদ্রোহী এ গোষ্ঠীর অধীনে।

আরও পড়ুন:

এদিকে স্বর্ণের শহর দুবাইয়ের বেশিরভাগ সোনা যায় আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে। মূলত আরএসএফের অধীনে থাকা বিপুল স্বর্ণের খনির জন্যই সংযুক্ত আরব আমিরাত তাদেরকে অস্ত্র-গোলাবারুদসহ আর্থিক জোগান দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে আর্টিলারি শেল ও বিভিন্ন ধরনের ড্রোন। যেগুলো সাম্প্রতিক সময়ে হামলায় ব্যবহার করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি। এর বিনিময়ে সুদানকে নিজেদের কব্জায় রাখতে চায় মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটি। যদিও পুরো বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে আবুধাবি।

অপরদিকে মিশর, তুরস্ক ও ইরানের বিরুদ্ধে নিজ নিজ স্বার্থে সুদানের সেনাবাহিনীকে মদদ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। ইনস্টিটিউট অব ওয়ারের তথ্যমতে, সুদানের সীমান্তবর্তী মিশর লাখ লাখ শরণার্থীকে আবারও নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে চায়। এ কারণেই সুদানের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের সেনা সদস্যদের সমরাস্ত্র সরবরাহের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ দেয় কায়রো।

সেজু