অসময়ের বৃষ্টিতে নওগাঁয় ফসলে ব্যাপক ক্ষতি

জমিতে কৃষক
জমিতে কৃষক | ছবি: এখন টিভি
0

অসময়ে বৃষ্টিতে নওগাঁয় আগাম জাতের শাক-সবজি ও আমন ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফসল নষ্ট হওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকরা। তবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এখনো ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে পারেনি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে-জেলায় আমন ধান চাষ হয়েছে ১ লাখ ৯৩ হাজার হেক্টর জমিতে। আগাম শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছে ২ হাজার হেক্টর জমিতে। এছাড়া আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ হাজার হেক্টর জমিতে।

জেলা বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্যমতে- জেলায় গত ৩ দিনে গড় ৫০ দশমিক ৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এরমধ্যে আজ (শনিবার, ১ নভেম্বর) বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৮৬ মিলিমিটার।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে নওগাঁ সদর, মহাদেবপুর ও মান্দা উপজেলা সহ বিভিন্ন উপজেলায় কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ফসলি জমিতে পানি জমেছে।

আরও পড়ুন:

যেসব জমিতে আগাম আলুর বীজ রোপণ করা হয়েছে, সেসব জমিতে পানি জমায় বীজ পঁচে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার শঙ্কা করছেন কৃষক।

এছাড়াও আগাম জাতের শীতকালীন সবজি ফুলকপি, বেগুন, মূলাসহ বিভিন্ন শাকসবজি এবং রসুন ও পিয়াজক্ষেতে বৃষ্টির পানি জমেছে। এছাড়াও পাকা ও আধাপাকা রোপা আমন ধান মাটিতে শুয়ে পড়েছে।

কৃষকরা বলছেন, হঠাৎ বৃষ্টিতে শীতকালীন আগাম জাতের শাকসবজির জমিতে পানি জমে থাকায় পচন ধরে নষ্ট হচ্ছে। রোপিত রসুন-পেঁয়াজ ও আলু ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া কয়েকদিন পর রোপা আমন ধান কেটে ঘরে উঠানোর কথা। তার আগেই জমিতে পানি জমে ধান মাটিতে শুয়ে পড়ায় বিঘাতে ফলন অন্তত ৫-৬ মণ কম হবে।

সদর উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের কৃষক হাসান আলী জানান, এক বিঘা জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ করেছি। আর কয়েকদিন পর কাটার কথা। এরমধ্যে বৃষ্টি হওয়ায় জমিতে পানি জমে ধান শুয়ে পড়েছে। পানিতে ধান ভাসছে। যেখানে বিঘাপ্রতি ২৫-২৬ মন ফলন হওয়ায় কথা। এখন সেখানে ১৮-২০ মণ ফলন হতে পারে।

লক্ষণপুর গ্রামের কৃষক দুলাল হোসেন জানান, গত ১৫ দিন আগে ২ কাঠা জমিতে লাল শাক রোপন করেছি। এরমধ্যে ৩ দিনের বৃষ্টিতে শাকগুলো মাটিতে হেলে পড়েছে। পচন ধরেছে। গাছ যদি ভালো হয় ৩০০-৫০০ টাকার মতো বিক্রি হবে। বৃষ্টি না হলে আড়াই হাজার টাকার মতো বিক্রি হতো।

ফসলের ক্ষতির পরিমাণ এখনো নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি জানিয়ে নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হোমায়রা মন্ডল বলেন, ‘সবেমাত্র আগাম জাতের আলু, পেঁয়াজ ও রসুন রোপণ করা শুরু হয়েছে। এতে তেমন কোনো ক্ষতি হবে না।’

এছাড়া বৃষ্টি হওয়ায় ধানের ক্ষতিকর পোকা মারা যাওয়ায় বৃষ্টি আশীর্বাদ বলে জানান তিনি।

সেজু