‘ভূত’ মনোজগতের এক অমীমাংসিত অধ্যায়। এর অস্তিত্ব নিয়ে রহস্যের জট না খুললেও আজকের দিনটি ভূতেদের দখলে। কারণ খালি চোখে শাঁকচুন্নি, চোরাচুন্নি কিংবা মেছোভূতের দেখা মেলে। বাসাবাড়ি অথবা অলিগলি, প্রায় সবখানেই ঘুরে বেড়ায় ভূত। এ দিনটিকেই বলা হয় ‘হ্যালোইন’।
হ্যালোইনের ইতিকথা ২ হাজার বছরের বেশি পুরনো। শব্দটির অর্থ পবিত্র সন্ধ্যা। যার প্রথম ব্যবহার ১৭৪৫ খ্রিস্টাব্দে।
অষ্টম শতাব্দীতে, ধর্মগুরু পোপ গ্রেগরি তৃতীয় সব সাধুদের সম্মান জানাতে ১ নভেম্বরকে বেছে নেন। এটি এক সময় ‘অল সোলস ডে’ নামে পরিচিতি পায়। আবার তার আগের রাতটিকে ‘অল হ্যালোস ইভ’ বলা হতো, যা পরবর্তীতে হ্যালোইনে রূপ নেয়।
আয়ারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য এবং উত্তর ফ্রান্সে বসবাসকারী সেল্টিক জাতি ১ নভেম্বর তাদের নববর্ষ উদযাপন করত, যার আরেক নাম ছিল ‘সামহেইন’।
আরও পড়ুন:
সেল্টিকদের ধারণা, অতৃপ্ত আত্মা বা প্রেতাত্মারা এ দিনটিতে মানুষের ক্ষতি করতে পারে। তাই তাদেরকে ভয় দেখানোর জন্যই ভৌতিক পোশাক ও মুখোশ পরার প্রচলন শুরু হয়।
সেল্টরা বিশ্বাস করতো, সামহেইনে জীবিতদের সঙ্গে মৃতদের আত্মার যোগসূত্র ঘটে। এদিন পৃথিবী ও মৃতদের মধ্যে ব্যবধান ঝাপসা হয়ে যায়, যার ফলে মৃতরা মর্ত্যে ফিরে আসে। এ দিনটিতে তারা বিশাল আগুন জ্বালানোর পাশাপাশি একে অপরের ভাগ্য গণনাও করতো।
অন্যদিকে আইরিশরা হ্যালোইনে শালগম দিয়ে ভৌতিক আকৃতির মুখের অবয়ব তৈরি করতো। তবে ঊনিশ শতকে আইরিশরা আমেরিকায় চলে আসে। আর সেখানে কুমড়ো চাষ অনেক সহজ ছিল। এরপর থেকেই ‘হ্যালোইন’ উদযাপনে কুমড়োর ব্যবহার শুরু হয়। আর জ্যাক নামের এক আত্মাকে ভয় দেখানোর জন্যই সবজির মধ্যে ভয়ঙ্কর মুখ খোদাই করা হয়।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতি বছরের ৩১ অক্টোবর রাতে ‘হ্যালোইন’ পালন করা হয়। গ্রীষ্মের শেষ আর শীতের শুরুর দিন হিসেবে ধরা হতো এটিকে। এ সময়টা মানুষের মৃত্যুর সঙ্গে সম্পর্কিত বলে বিশ্বাস করতো সেল্টিকরা।
ভূত সাজার পাশাপাশি এ রাতের অন্যতম অনুষঙ্গ ভূতের গল্প। অতিপ্রাকৃত বিষয় নিয়ে কৌতূহল ও ভয়কে মোকাবিলা করার জন্য দিনটিতে ভূতুড়ে বিভিন্ন গল্পও পড়া হয়।



