রাশিয়া থেকে তেল কিনবে না ভারত, কংগ্রেসের অভিযোগ—ট্রাম্পের ইশারায় নাচছেন মোদি

নরেদ্র মোদি ও ডোনাল্ড  ট্রাম্প
নরেদ্র মোদি ও ডোনাল্ড ট্রাম্প | ছবি: সংগৃহীত
0

রাশিয়া থেকে ভারত আর তেল কিনবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ট্রাম্পের এমন দাবির পর নয়াদিল্লি জানিয়েছে ভারতীয়দের স্বার্থ রক্ষায় অগ্রাধিকার দেয়া হবে। তবে বিরোধী দল কংগ্রেসের অভিযোগ, ট্রাম্পের ইশারায় নাচছেন মোদি। এদিকে, মস্কোর তেল বাণিজ্য বন্ধে ভারত ও চীনের বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাজ্য।

গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর ট্রাম্পের সামনে এবার লক্ষ্য রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে উদ্যোগ নেয়া। কয়েক দফা দু'দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে আলোচনা করেও চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের ওপর তাই অনেকটাই নাখোশ ট্রাম্প। অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপে মস্কোকে একের পর এক হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

সম্প্রতি, রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কেনায় ভারতকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছেন ট্রাম্প। এরই জেরে ভারতের ওপর দায় চাপিয়ে আরোপ করেছেন উচ্চহারে বাণিজ্য শুল্ক। বুধবার হোয়াইট হাউজের এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প দাবি করেন, রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধে আশ্বাস দিয়েছেন মোদি। চীনকেও একই পথে আনার চেষ্টা করছেন তিনি। তবে যুদ্ধ শেষ হলে রাশিয়ার তেল কেনায় কোনো বাধা থাকবে না বলেও জানান ট্রাম্প।

আরও পড়ুন:

ট্রাম্পের এমন দাবির পর নয়াদিল্লি বলছে ভারতীয়দের স্বার্থ রক্ষায় অগ্রাধিকার দেয়া হবে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ভারতের আমদানি নীতি পুরোপুরি গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী পরিচালিত হয়। এছাড়া, জ্বালানির দাম স্থিতিশীল ও সরবরাহ নিশ্চিত করাই সরকারের অন্যতম লক্ষ্য বলেও জানানো হয়।

তবে মোদির কড়া সমালোচনা করে বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ট্রাম্পের ইশিরায় নাচেন। এক্স বার্তায় তিনি লেখেন, ট্রাম্পকে রীতিমতো ভয় পান মোদি। এছাড়াও, কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ মন্তব্য করেন, ভারতের কূটনীতি ও পররাষ্ট্রনীতি একেবারেই ধ্বংস হয়ে গেছে।

এদিকে, নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রুশ অর্থনীতিকে দুর্বল করার পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাজ্য। মস্কোর দুটি বৃহত্তম তেল কোম্পানি, লুকোয়েল ও রোসনেফ্ট ছাড়াও তেলবাহী ৫১টি জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ব্রিটেন। বিশ্ব বাজারে রাশিয়ার তেল সরবরাহে যুক্ত ভারত ও চীনা কোম্পানির ওপরও আরোপ করাা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।

রাশিয়ার জ্বালানি তেলের বড় দুই ক্রেতা ভারত ও চীন। বর্তমানে মস্কোর প্রধান তেল আমদানিকারক ভারত। গেল সেপ্টেম্বরে প্রতিদিন প্রায় ১৬ লাখ ২০ হাজার ব্যারেল জ্বালানি তেল ভারতে রপ্তানি করে তারা। যা দেশটির মোট তেল আমদানির তিন ভাগের এক অংশ।

২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন মস্কোর জ্বালানি তেল কেনা বন্ধ করে দেয়। তখন রাশিয়া বাধ্য হয়ে কম দামে তেল বিক্রি শুরু করে। এই সুযোগে ফায়দা নিচ্ছে ভারত ও চীন।

ইএ