প্রতিষ্ঠার পর ছয় দশকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে মোটে ছয়বার। এর মধ্যে একবারও জয়লাভ করতে পারেনি ছাত্রদল। অন্যদিকে ১৯৮১ সালের নির্বাচনে ভিপি-জিএস উভয় পদেই জয় লাভ করে ইসলামী ছাত্রশিবির। প্রায় ৩৬ বছর পর ফের এ নির্বাচন তাই ছাত্রদলের জন্য কঠিন এক পরীক্ষাই বলা চলে।
চাকসু নির্বাচন ঘিরে এরই মধ্যে ছাত্রদলের কোন্দল স্পষ্ট হয়েছে। দলের সমর্থন না পেয়ে হতাশ হয়েছেন বহু প্রার্থী, নির্বাচনী মাঠেও নেই তেমন সক্রিয়তা।
অন্যদিকে ৫ সদস্যের কমিটির এক সিনিয়র সহ-সভাপতিকে ১২ অক্টোবর আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। অভিযোগ— দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর জন্য কাজ করেছেন তিনি। যদিও দলে বিবাদ নেই বলে দাবি ছাত্রদল মনোনীত প্রার্থীদের।
ছাত্রদল মনোনীত জিএস প্রার্থী শাফায়াত হোসেন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ছাত্রদলের গঠনতন্ত্রের বাইরে গিয়ে কেউ নির্বাচনে বিদ্রোহ করে অংশ নিচ্ছে না। যারা অংশ নিয়েছিল তারা অবশ্যই আমাদের সমর্থন দিয়েছেন এবং প্রচার প্রচারণায় আমাদের সবোর্চ্চ সহযোগিতা করছেন।’
ছাত্রদলের সূত্র বলছে, প্রার্থী বাছাই থেকেই দলে মতবিরোধ তৈরি হয়। তবে প্রচার-প্রচারণায় ঐক্যবদ্ধ থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন সিনিয়র নেতারা।
তাদের অভিযোগ, প্রশাসন একরোখা আচরণ করছে এবং প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা কিছু শিক্ষক শিবিরপন্থী। ফলে লড়াইটা অনেকটা প্রশাসনের সাথেও।
চবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি মোহাম্মদ আলাউদ্দিন মোহসীন বলেন, ‘এ প্রশাসন আসলে একটি পক্ষের দিকে চলে যায়, আমরা দেখেছি। সেটার পরিপ্রেক্ষিতে হলগুলোতে সেই পক্ষের দায়িত্ব পায় এবং তাদের মানুষগুলোকে সুবিধা দেয়ার বিষয়ে আমরা জানতে পেরেছি। সেগুলো এতদিন গোপনে ছিল, কিন্তু এখন ধীরে ধীরে আমরা এগুলো জানতে পারছি।’
নির্বাচনে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের প্রার্থীদের মধ্যেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে গুঞ্জন রয়েছে। তবে শিবিরের পরিস্থিতি অনেকটাই সুশৃঙ্খল। দলের হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তে প্রার্থিতা নির্ধারণ করা হয়েছে, নেই কোনো অসন্তোষ, প্রচারণায়ও তারা কৌশলী ও সংগঠিত।
সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোটের ভিপি প্রার্থী ইব্রাহিম হোসেন রনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থী ভাই-বোনরা হয়তো নিরবচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন কটেজ-মেসে থাকার কারণে তাদের কাছে পৌঁছতে পারিনি। আমাদের স্ট্র্যাটেজির সবচেয়ে বড় জায়গা ছিল যে, আমরা চেষ্টা করেছি আমাদের নিজেদের লিফলেটগুলো নিজেরাই আমাদের ভাই-বোনদের কাছে পৌঁছে দিতে।’
আগামীকাল (বুধবার, ১৫ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হবে সপ্তম চাকসু নির্বাচন। যেখানে প্রায় সাড়ে ২৭ হাজার শিক্ষার্থী ভোটের মাধ্যমে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন।





